ড্যাফোডিলে ‘বার্ধক্য বিষয়ক যুব সম্মেলন ২০১৮’
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সোস্যাল বিজনেস স্টুডেন্ট ফোরাম (এসবিএসএফ)-এর আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার (২৮জুন) ‘বার্ধক্য বিষয়ক যুব সম্মেলন ২০১৮’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর চেয়ারম্যান কাজী খলিকুজ্জামান আহমদের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত সেমনিারের প্যানেল আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, চ্যানেল টয়েন্টি ফোরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্যার ইউলিয়াম বেভারিজ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাস, জাতীয় প্রবীণ মঞ্চের সদস্য সচিব আবুল হাসিব খান, বয়ষ্ক পুণর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক মাসুমা খাতুন লিপি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বাণিজ্য অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল। সম্মেলনে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রিফাত একটি প্রবীণবান্ধব মোবাইল অ্যাপের ধারনা উপস্থাপন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঈর্ষনীয় উন্নয়ন ঘটছে, কিন্তু প্রবীণদের বাদ রেখে এ উন্নয়নকে খুব বেশি তরান্বিত করা যাবে না। কারণ তারা সমাজেরই অংশ। তাই উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে একটি প্রবীণবান্ধব সমাজ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এ উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা করেছে এবং প্রবীণ ভরণপোষন আইন প্রণয়ন করেছে। তবে এই আইনের খুব একটা প্রয়োগ নেই বলে জানান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত এই আইনে মাত্র দুটি মামলা হয়েছে বলে তিনি জানেন।
তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কাজী রিয়াজুল হক বলেন, বার্ধক্যের যুব সম্মেলন একটি নতুন ধারনা। এই সময়পযোগী ধারণাকে সর্বস্তরের তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে তরুণরা প্রবীণদের প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন হবে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষকতার কারণে মানুষের ব্যস্ততা বেড়েছে। গড়ে উঠেছে নানা ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু তারপরও ঘাটতি দেখা দিয়েছে আন্তঃসম্পর্কের জায়গাগুলোতে। এই আন্তঃসম্পর্কের ঘাটতি পূরণ করার জন্য নবীন-প্রবীণের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। ‘বার্ধক্য বিষয়ক যুব সম্মেলন’ নবীন-প্রবীণের মধ্যে একটি কার্যকর সমন্বয় গড়ে তুলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ড. মো. সবুর খান বলেন, আমাদের প্রতিটি ধর্মেই প্রবীণদেরকে শ্রদ্ধা, সম্মান ও অধিকার প্রদানের কথা বলা হয়েছে। তরুণদের উচিত তাদের পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া।
সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। আজকের সংবাদপত্রেই খবর এসেছে, গড় আয়ু এখন ৭২ বছর। এ দেশে বর্তমানে ৭ শতাংশ মানুষ প্রবীণ। এই বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর কথা আমাদেরকে ভাবতে হবে। কারণ মানুষ বৃদ্ধ হয়ে গেলে অসহায় হয়ে পড়ে। আর্থিক সংকট, অসুখ-বিসুখ, একাকিত্ব এরকম নানা কারণে তারা অসহায় হয়ে পড়ে। এসময় তাদের পাশে দাঁড়ানোটা তরুণদের দায়িত্ব।
কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ আরো বলেন, উন্নত দেশগুলোতে সামাজিক সুরক্ষা বিষয়টি যেভাবে কার্যকর, আমাদের দেশে তা নেই। এজন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে সামাজিক সুরক্ষা তৈরি করার জন্য। তরুণদেরকে তিনি বলেন, তোমাদের হাত ধরে এমন একটা সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে যেখানে প্রতিটি সন্তান তার পরিবারের প্রবীণ ব্যক্তির দায়িত্ব নেবে। এমনকি যে প্রবীণ ব্যক্তির কোনো সন্তান নেই তিনিও যেন সন্তানের অভাব অনুভব না করেন এমন একটি প্রবীণবান্ধব নৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আমরা দেখি। তোমরা আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করবে বলে বিশ্বাস রাখি।