ড্যাফোডিলে ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ’ শীর্ষক মতবিনিময়
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে ‘উত্ত্যক্তকরণ, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে হাইকোর্ট বিভাগের রায় বাস্তবায়ন বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়’ শীর্ষক এক সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে ‘তরুণ সমাজ এগিয়ে আসুন, উত্যক্তকরণ, যৌন নিপীড়ন সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করুন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ সেমিনার ও সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক অ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা হেলাল মেহতাব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক গোলাম মওলা চৌধুরী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম বলেন সামাজে নানা ধরনের মানুষ আছে। প্রতিটি মানুষই স্বতন্ত্র। প্রতিটি মানুষের সম্মিলিত অবদানেই গড়ে উঠেছে সমাজ, রাষ্ট্র ও সভ্যতা। তাই নারীদেরকে যদি সমাজে অবদান রাখার সুযোগ দেওয়া না হয় তবে সেই সমাজে কখনোই ভারসাম্য তৈরি হবে। এসময় তিনি সাইকেলের চাকার স্পোকের উদাহরণ দিয়ে বলেন, একটি সাইকেলের চাকায় অনেকগুলো স্পোক থাকে। প্রতিটি স্পোক আলাদা এবং বৈচিত্রপূর্ণভাবে সাজানো। এইসবগুলো স্পোক মিলেই পুরো চাকার ভারসাম্য রাক্ষা করে। ঠিক একইভাবে সমাজের ভারসাম্য রক্ষায় নারী-পুরুষ সমানভাবে অবদান রাখে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম বলেন, মানুষের মাথার ব্রেইনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি প্রশ্ন করতে পারে। আর প্রশ্ন করার ক্ষমতা আছে বলেই মানুষ পৃথিবীর নানা সমস্যার সমাধান বের করতে পেরেছে। অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন যে, তরুণ শিক্ষার্থীরা বেশি বেশি প্রশ্ন করার মাধ্যমে সমাজে নারী-পুরুষের অসমতাজনিত সমস্যার সমাধান বের করতে পারে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে আয়েশা খানম বলেন, বাংলাদেশ নানা দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার হার বাড়ছে, মাথাপিছু আয় বাড়ছে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে। এই দেশে নারীরা ক্রিকেট, ফুটবল, সাংবাদিকতা, শিক্ষা থেকে শুরু প্রায় প্রতিটি সেক্টরে অসামান্য সাফল্য বয়ে আনছে। কিন্তু এত সাফল্যের পরও এই দেশে নারীরা পথে-ঘাটে, যানবাহনে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমনকি পরিবারেও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে না পারলে সমস্ত উন্নয়ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। জিডিপির উন্নয়ন বাড়বে ঠিকই কিন্তু জাতি হিসেবে সভ্য হতে পারব না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আয়েশা খানম আরো বলেন, নারীকে উত্যক্তকরণ ও যৌন নিপীড়ন নতুন কোনো ব্যাধি নয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এর বিরুদ্ধে যুগ যুগ ধরে লাড়াই করে যাচ্ছে মহিলা পরিষদ সহ সমাজের সচেতন মানুষ। নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদাসম্পন্ন এক মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলাই লড়াইয়ে তরুণদেরকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানটি শেষ হয় শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে।