উচ্চশিক্ষার দুয়ার খোলা নরওয়েতে
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
নরওয়েতে যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, এর মধ্যে ‘ইউনিভার্সিটি অব অসলো’ সবচেয়ে পুরনো এবং বড় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান নরওয়ের রাজধানী অসলোতেই। রাজা ফ্রেডরিক ১৮১১ সালে নরওয়ে ও ডেনমার্কে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম ছিল ‘দ্য রয়েল ফ্রেডরিক ইউনিভার্সিটি’। ওই সময়ই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইউনিভার্সিটি অব বার্লিন’। ১৯৩৯ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ইউনিভার্সিটি অব অসলো।
ইউনিভার্সিটি অব অসলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বেশ কয়েকটি ফ্যাকাল্টির সমন্বয়ে। শুরুতেই ধর্মতত্ত্ব, আইন, চিকিৎসাশাস্ত্র, মানববিদ্যা, গণিত, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, রাজনীতি, সমাজবিজ্ঞান এবং শিক্ষা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি প্রদান করা হতো। ১৯৩০ সালের পরে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেই প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি হাসপাতাল। যা-ই হোক, ইউনিভার্সিটি অব অসলো এখন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। ২০১০ সালে ‘একাডেমিক র্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিস’ বিশ্বের নামকরা একশ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করে। উদ্দেশ্য সবদিক থেকে ভালো বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন।
এই জরিপে ইউনিভার্সিটি অব অসলোর অবস্থান পঁচাত্তরতম। তবে নরডিক দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান চবি্বশতম। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। শিক্ষার্থীদের নানা বিষয়ে আরও উচ্চতর ডিগ্রি প্রদানের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি সবসময় তৎপর।
মূল সিলেবাসের সঙ্গে প্রতিবছরই যুক্ত হয় নতুন নতুন বিষয়। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব অসলোর ফ্যাকাল্টিগুলোর অধীনে যেসব বিভাগ আছে তা হলো_ ফ্যাকাল্টি অব থিওলজির অধীনে কেবল বিভিন্ন দেশের ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কেই পড়াশোনা করা যায়। ল ফ্যাকাল্টির অধীনে যেসব বিভাগ আছে তা হলো_ নরওয়েজিয়ান রিসার্চ সেন্টার ফর কম্পিউটারস অ্যান্ড ল; ডিপার্টমেন্ট অব ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড দ্য সসোলজি অব ল; ডিপার্টমেন্ট অব প্রাইভেট ল; ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ল; সেকশন অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্টেটিভ সিস্টেমস; সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান ল; নরওয়েজিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস।
ফ্যাকাল্টি অব হিউম্যানিসের অধীনে আছে_ ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিওলজি, কনজারভেশন অ্যান্ড হিস্টরি; ডিপার্টমেন্ট অব কালচারাল স্টাডিজ অ্যান্ড ওরিয়েন্টাল ল্যাঙ্গুয়েজস; ডিপার্টমেন্ট অব ফিলোসফি, কাসিকস, হিস্টরি অব আর্ট অ্যান্ড আইডিয়াস; ডিপার্টমেন্ট অব লিটারেচার, এরিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড ইউরোপিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজস; ডিপার্টমেন্ট অব লিঙ্গুয়িস্টিকস অ্যান্ড স্ক্যান্ডিনেভিয়ান স্টাডিজ; ডিপার্টমেন্ট অব মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন; ডিপার্টমেন্ট অব মিউজিকোলজি; ইউনিট অব ডিজিটাল ডকুমেন্টেশন; সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব মাইন্ড ইন ন্যাচার ইত্যাদি।
ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিনের উল্লেখযোগ্য বিভাগগুলো হলো_ ইনস্টিটিউট অব বেসিক মেডিকেল সায়েন্সেস; ইনস্টিটিউট অব জেনারেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড কমিউনিটি মেডিসিনসহ আরও কিছু বিভাগ। ফ্যাকাল্টি অব ম্যাথমেটিকস অ্যান্ড ন্যাচারাল সায়েন্সেসের অধীনেও আছে উল্লেখ করার মতো বিভাগ। এ ছাড়া আছে ফ্যাকাল্টি অব অ্যাডুকেশন, ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরি, ফ্যাকাল্টি অব ডেনটিসট্রি, ফ্যাকাল্টি অব সোশ্যাল সায়েন্সেস।
শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত গ্রন্থাগারটিতে আছে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্লভ সব বই, পাণ্ডুলিপি ইত্যাদি। আছে জাদুঘর। মোটকথা, সব দিক থেকে অতুলনীয় এ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাচ্যে আমাদের দেশ থেকে যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে যান, তারা এ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পারেন। http://www.uio.no/english ঠিকানায় ক্লিক করলেই পাওয়া যাবে ইউনিভার্সিটি অব অসলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।