মালয়েশিয়ার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বছরজুড়ে পাড়ি জমান ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। পশ্চিমা দেশগুলোতে শিক্ষা ও বসবাসের খরচ বেশি হওয়ায় স্বল্প খরচ ও সাধ্যের মধ্যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ মালয়েশিয়া।
এ ছাড়া আবহাওয়াগত কারণে বসবাসের জন্যও বাংলাদেশিদের কাছে মালয়েশিয়া পছন্দনীয়। অনেকেই আবার এখানে ‘সেকেন্ড হোম’ করে গড়েছেন স্থায়ী নিবাস।
আর এসব চিন্তা করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প খরচে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদানে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি পেনডিডিকান সুলতান ইদ্রিস (ইউপিএসআই) বিশ্ববিদ্যালয় দিচ্ছে এক অভাবনীয় সুযোগ।
কুয়ালালামপুরের অদূরে সেলানগর রাজ্যের শেষ প্রান্ত এবং পেরাক রাজ্যের শুরুতেই তাঞ্জুং মালিমে অত্যন্ত মনোরম ও প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি পেনডিডিকান সুলতান ইদ্রিস।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার এ প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯২২ সালে টিচার্স কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম এ বিশ্ববিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় তৎকালীন সুলতান ইদ্রিসের নামানুসারে।
স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডক্টরেট এবং বিশেষ ডিগ্রিসহ শতাধিক প্রোগ্রাম পরিচালনা করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ভাষা, শিল্প-সংগীত, কগনিটিভ বিজ্ঞান ও হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ব্যবসা ও অর্থনীতি, খেলাধুলা বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিকসহ বিভিন্ন অনুষদে গঠিত শিক্ষা কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে মালয়েশিয়ার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে।
অত্যন্ত মনোরম ও প্রাকৃতিক পরিবেশে তাঞ্জুং মালিম শহরে বিশ্ববিদ্যালয়টির দৃষ্টিনন্দন মূল ক্যাম্পাসটি প্রায় ২০০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে। ক্যাম্পাসের মনোরম, শান্ত, সবুজ ও প্রাকৃতিক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে নিজস্ব সুপরিসর হোস্টেল ব্যবস্থা। এ ক্যাম্পাস সুলতান আবদুল জলিল শাহ বা পুরাতন ক্যাম্পাস হিসেবে পরিচিত। এ ক্যাম্পাসে রয়েছে উপাচার্যের অফিস ভবন, ই-লার্নিং ভবন, আর্ট ভবন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ভবন, স্টেডিয়ামসহ আরো নয়নাভিরাম স্থাপনা।
এ ছাড়া প্রোটন সিটিতে গড়ে ওঠা নতুন ক্যাম্পাস পুরাতন ক্যাম্পাস থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের পাশে ৮০০ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত।
এ ক্যাম্পাসে রয়েছে আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের সব ফ্যাকাল্টি, ক্যাফেটেরিয়া, অডিটোরিয়াম ও কারুকার্যখচিত বিশাল মসজিদ।
ফ্যাকাল্টিগুলোর মধ্যে রয়েছে—ফ্যাকাল্টি অব ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কমিউনিকেশন, ফ্যাকাল্টি অব মিউজিক অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস, ফ্যাকাল্টি অব কম্পিউটিং এবং ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি, ফ্যাকাল্টি অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিকস, ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাথমেটিকস, ফ্যাকাল্টি অব এডুকেশন অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট, ফ্যাকাল্টি অব স্পোর্টস সায়েন্স অ্যান্ড কোচিং, ফ্যাকাল্টি অব হিউম্যান সায়েন্স, ফ্যাকাল্টি অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন ইত্যাদি।
ইউনিভার্সিটি পেনডিডিকান সুলতান ইদ্রিসে ডিপ্লোমাতে ভর্তির জন্য এসএসসিতে জিপিএ ৩ অথবা ও-লেভেলে কমপক্ষে পাঁচটিতে সি থাকতে হবে। ব্যাচেলরে ভর্তির জন্য এসএসসি ও এইচএসসিতে মিনিমাম জিপিএ ৩ করে থাকতে হবে। আইইএলটিএসে স্কোর থাকতে হবে ছয় অথবা ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স করতে হবে।
মাস্টার্সে ভর্তির জন্য ব্যাচেলরে সিজিপিএ ২.৭৫ থাকতে হবে আইইএলটিএসে স্কোর থাকতে হবে ছয় অথবা ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স করতে হবে।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার পদ্ধতিতে ডিপ্লোমায় ছয় সেমিস্টার, ব্যাচেলরে আট, মাস্টার্সে তিন সেমিস্টার, এমবিএতে চার সেমিস্টার ও পিএইচডির ছয়টি সেমিস্টারে সাজানো হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।
এখানে পড়াশোনার খরচও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতোই। ডিপ্লোমাতে ১৪০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত প্রতি সেমিস্টার, ব্যাচেলরে ২২৫০ থেকে ২৭০০ রিঙ্গিত, মাস্টার্সে ২৮০০ থেকে ৩০০০ রিঙ্গিত, পিএইচডিতে এক সেমিস্টারের জন্য প্রয়োজন হয় ৫৫০০ রিঙ্গিত। এছাড়াও রয়েছে ১৩০০ থেকে ১৫০০ ইএমজিএস ফি, অ্যাপ্লিকেশন ফি ৮০ রিঙ্গিত, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফি ১৫০০-২৫০০ এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট প্রসেসিং ফি ২৫০০ রিঙ্গিত।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টদের জন্য প্রথম সেমিস্টার হোস্টেলে থাকা বাধ্যতামূলক। হোস্টেল ফি প্রতি সেমিস্টার (এসিসুবিধাসহ) ১৯৫০ রিঙ্গিত। তবে মাস্টার্স ও পিএইচডি ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মতো করে আবাসন ব্যবস্থা করে নিতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা চাইলে সেমিস্টারের অবকাশকালীন ও সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পার্টটাইম জব করতে পারবে।
ভর্তি-সংক্রান্ত সব কার্যক্রমের জন্য দুই-তিন মাস সময় লাগবে। ইউপিএসআই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সুবিধা বিবেচনা করে অতিরিক্ত শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অ্যাডমিশনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ভর্তি-সংক্রান্ত সব তথ্য জানতে যোগাযোগ করতে পারেন এক্সা এডুকেশন অফিসে।
এ ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যাবে এক্সা এডুকেশনে (Exa Education)। এক্সা এডুকেশনের ঠিকানা : কবিরস পয়েন্ট, ১২৯ সেনপাড়া পর্বতা, বেগম রোকেয়া সরণি, মিরপুর-১০, ঢাকা-১২১৬। ফোন : +৮৮০১৭৩৩৪৪২৬৪৪, +৬০১০৩৭৩১৫৩০ । ই-মেইল : exaeducation@gmail.com, ফেসবুক : Exa Education।