টার্গেট যখন ক ইউনিট
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের লড়তে হয় ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়। পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ে দরকারি পরামর্শ দিয়েছেন ২০১২ সালের ‘ক’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম নাবিল ইবতেহাজ।
ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন থাকবে ছয়টি বিষয়ে। এর মধ্যে উত্তর করতে হবে চারটি বিষয়। রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান বাধ্যতামূলক। যারা চতুর্থ বিষয় হিসেবে গণিত অথবা জীববিজ্ঞান পড়েছ, তারা এর যেকোনো একটি বাদ দিয়ে ইংরেজি অথবা বাংলার উত্তর করতে পারো। ইচ্ছে করলে জীববিজ্ঞান ও গণিতেরও উত্তর দিতে পারো। মোট ১২০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, প্রতিটির নম্বর সমান। ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০.২৫ নম্বর। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হলেও আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হয়নি, আমি ভর্তি হয়েছি বুয়েটে। পরীক্ষার্থীদের জন্য আমার পরামর্শ, বিগত বছরের প্রশ্নগুলো নিয়মিত চর্চা করো। মডেল টেস্টে অংশ নিলে নিজেকে যাচাই করার একটা সুযোগ পাওয়া যায়।
পদার্থ
পদার্থবিজ্ঞানে গাণিতিক ও তাত্ত্বিক- উভয় ধরনের প্রশ্নই করা হয়ে থাকে। তবে গাণিতিক প্রশ্ন সংখ্যায় বেশি আসে বলে অঙ্কে আলাদা নজর দিতে হবে। গাণিতিক প্রশ্নের সমাধানের জন্য প্রতিটি সূত্র এমনভাবে পড়তে হবে, যাতে পরীক্ষার হলে আর চিন্তা করে বের করতে না হয়। সমীকরণগুলো ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। তাত্ত্বিক অংশ থেকে সাধারণত তিন থেকে চারটি প্রশ্ন থাকে। তার পরও এর জন্য প্রতিটি অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় প্রতিবছরই পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কিত সাম্প্রতিক ঘটনাবলি থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে। এ জন্য পড়তে হবে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী।
রসায়ন
গাণিতিক ও তাত্ত্বিক প্রশ্ন প্রায় সমানুপাতিক হারে আসে রসায়নে। গাণিতিক অংশে ভালো করার জন্য বিভিন্ন একক ও সংকেত ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। তাত্ত্বিক অংশের জন্য যোজনী, বিক্রিয়া, ভর, তুল্য সংখ্যা, সংকেতসহ সব অধ্যায় মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো বুঝে পড়তে হবে। রসায়নের ক্ষেত্রে ভুল উত্তর ও সঠিক উত্তরের মধ্যে পার্থক্য খুব কম থাকে। তাই সতর্ক থাকতে হবে উত্তর করার সময়। বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে প্রয়োগে ভুল না হয়।
গণিত
গণিতের ক্ষেত্রে বড়, ছোট সব ধরনের প্রশ্নই হয়ে থাকে। সময় কম থাকে বলে বড় অঙ্কগুলো ক্যালকুলেটরের সাহায্যে সংক্ষিপ্ত আকারে করার চেষ্টা করতে হবে। এ জন্য সমাধানের বিভিন্ন সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি অনুশীলন করতে হবে। ছোট অঙ্কগুলোও যত সংক্ষিপ্ত আকারে সমাধান করা যায় ততই ভালো। গণিতে ভালো করার জন্য নিয়মিত অনুশীলন ও সূত্র মনে রাখার বিষয়ে পরামর্শ দেব। অঙ্কের সমাধান করার সময় সূত্রের ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে। ক্যালকুলেটরের ব্যবহার ভালো করে শিখে নিতে হবে। ত্রিকোণমিতি পুরোটাই ক্যালকুলেটরে সলভ করা যায়।
জীববিজ্ঞান
জীববিজ্ঞানে প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র থেকে সাধারণত সমান সংখ্যক প্রশ্ন থাকে। এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলনামূলক সহজ হয়। প্রতিটি অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসে বলে কোনো কিছুই বাদ দেওয়া যাবে না। মানবদেহ থেকে তুলনামূলক কম প্রশ্ন হয় বলে অবজ্ঞা করা যাবে না। মাথায় রাখতে হবে তুলনামূলক সহজ বলে না পড়লে কিন্তু প্রশ্নের উত্তর পারা যাবে না। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক নাম, শ্রেণীবিন্যাস বেশি বেশি পড়তে হবে। সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য বইয়ের পড়াই যথেষ্ট। বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে হুবহু না হলেও একই নিয়মে ৭০-৮০ শতাংশ কমন পড়ে।
বাংলা
বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রায় সমান সংখ্যক প্রশ্ন থাকে। প্রথম পত্রের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশেষ করে কবিতার লাইন, কবি ও লেখক পরিচিতি এবং গল্প ও কবিতার উৎস ভালোভাবে পড়তে হবে। ব্যাকরণ অংশের প্রস্তুতির জন্য নবম-দশম শ্রেণীর বোর্ড নির্ধারিত বইটি বেশ কাজে দেবে। ব্যাকরণ অংশের অধিকাংশ প্রশ্ন সাধারণত এখান থেকেই হয়ে থাকে। বাদ দেওয়া যাবে না বিরচন ও আনুষঙ্গিক অংশও। ইংরেজি সাধারণত গ্রামার থেকেই বেশি প্রশ্ন করা হয় ইংরেজিতে। গ্রামারে ভালো দখল থাকলে এ বিষয়ে ভালো নম্বর তোলা সহজ। শব্দভিত্তিক অর্থাৎ vocabulary, synonym, antonym থেকেও অনেক প্রশ্ন হয়। এ জন্য নিয়মিত নতুন নতুন শব্দ শিখে শব্দভাণ্ডার বাড়াতে হবে। বিশেষ করে বোর্ড নির্ধারিত বইয়ের কঠিন কঠিন শব্দগুলো আয়ত্তে আনতে হবে। বিগত বছরের প্রশ্ন দেখলে প্রশ্নের ধারা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।