গল্পে শোনা ক্যাম্পাস
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন
স্কুল-কলেজে পড়ার সময় থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন শিক্ষার্থীদের মনে ডালপালা মেলতে শুরু করে। স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ‘শিক্ষার্থী’ পরিচয়ে প্রথম দিন পা রাখার অনুভূতিটা কেমন? দেশে-বিদেশে স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা লিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের প্রথম দিনের গল্প।গত বছর ২৫ মার্চ ছিল আমাদের নবীনবরণ। সেই স্কুলজীবন থেকে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প শুনে বড় হয়েছি, সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই ছাত্রী হিসেবে সেদিন আমি হাজির!
২৪ মার্চ আম্মু নতুন জামা কিনে দিলেন। পরদিন প্রথম ক্লাস। কী পরব, কী করব! এসব ভাবতে ভাবতেই রাত পেরোল। ঘুমহীন চোখে, চাপা রোমাঞ্চ নিয়ে সেদিন ক্যাম্পাসে পা রেখেছিলাম।
এখনো প্রথম দিনটার কথা ভাবলেই কেন যেন মনটা অজানা আনন্দে ভরে যায়। জামালপুরের মতো মফস্বল শহরে বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন দেখতাম। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার দিন তো অবশ্যই বিশেষ কিছু।
প্রথম দিন আমি ছিলাম চাচির বাসায়। ধানমন্ডির জিগাতলায়। সেই বাসা থেকেই সকালে বেরোলাম। এইটুকুন পথে পাঁচ মিনিটের সংক্ষিপ্ত যানজটে আটকা পড়লাম সায়েন্সল্যাবের মোড়ে। অন্য দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে কাটাই, অথচ সেদিন পাঁচ মিনিটের যানজটেও তর সইছিল না।অবশেষে ক্যাম্পাসে পৌঁছলাম। নিজের বুকের ধুকপুকানি টের পেয়ে নিজেরই হাসি পাচ্ছিল। হাত-পা ঘামছিল। ভাবছিলাম, স্বপ্ন পূরণের দিনটা বোধ হয় এমনই হয়।
এর আগেও ঢাবিতে এসেছিলাম ভাইভা দেওয়ার জন্য। কিন্তু ছাত্রী হিসেবে যাওয়ার অনুভূতিটা একেবারে অন্য রকম। ক্যাম্পাস ঘুরে ঘুরে ক্লাসরুম খুঁজে বের করার সময়টাতে আনন্দ আর ভয়ের একটা অদ্ভুত মিশ্রণ টের পাচ্ছিলাম। ক্লাসে গিয়ে নতুন সহপাঠীদের সঙ্গে কথা হলো। বুঝলাম, তাঁদের অবস্থাও আমার মতো।
একে একে বিভাগের শিক্ষকেরা নিজেদের পরিচয় দিলেন। নিয়মকানুন বললেন। প্রথম দিন ক্লাস শুরুই হলো একগাদা উপদেশ শুনে! তবে সত্যি বলতে, সেদিন কোনো কিছুই কান দিয়ে ঢুকছিল না। ‘আমি আমার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে বসে আছি’—এটা বিশ্বাস করতেই তো পুরোটা সময় কেটে গেল! কী যে আনন্দ হচ্ছিল! লক্ষ্মী মেয়ের মতো চুপচাপ বসে ছিলাম ঠিক। তবে সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই হাত-পা ছোড়াছুড়ি করে একটু নেচে নিতাম!