তিনজন শিক্ষক দিয়ে চলছে বেরোবির সাংবাদিকতা বিভাগ

তিনজন শিক্ষক দিয়ে চলছে বেরোবির সাংবাদিকতা বিভাগ

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পাঁচটি ব্যাচের ২৬০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য মাত্র চারজন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে একজন শিক্ষক রয়েছেন এক বছরের শিক্ষা ছুটিতে। এ অবস্থায় বিভাগটির শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

বিভাগ সূত্র জানায়, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ না দিয়েই ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভর্তি কার্যক্রম। বিভাগটিতে বর্তমানে পাঁচটি ব্যাচের ২৬০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।

অথচ এই বিভাগে চারজন শিক্ষক থাকলেও গত ১ মার্চ থেকে একজন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে যান। ফলে তিনজন শিক্ষক দিয়েই চলছে পাঁচটি ব্যাচের ২৬০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান।

এ কারণে ওই তিন শিক্ষককে অতিরিক্ত চাপ নিয়ে পাঁচটি ব্যাচের ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি বিভাগটির নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক তিনজনকে মনোনীত করে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় এবং তিনজনের প্যানেল রাখা হয়। কিন্তু সুপারিশকৃতদের মধ্যে প্রথম জন যোগদান না করায় সিন্ডিকেট প্যানেলে থাকা প্রথম জনকে অযোগ্য দেখিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্যানেলের প্রথম স্থানে থাকা মাহমুদুল হকের করা রিটের কারণে ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ওই শিক্ষক পদের নিয়োগ তিনমাসের জন্য বন্ধ ও আবেদনকারীর জন্য সংরক্ষণ করার আদেশ দিয়েছেন। ফলে বিভাগটির শিক্ষক নিয়োগ জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তু ঘটনার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এই জটিলতার নিরসন হচ্ছে না।

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবী দীর্ঘদিন বিভাগটির সভাপতি পদে দায়িত্বে থাকলেও নিয়োগ জটিলতা নিরসনে নেননি কোনো কার্যকরী উদ্যোগ।

বিভাগটির শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া বিভাগটির প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইতোমধ্যে স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তারা এখনো রয়েছেন চতুর্থ বর্ষেই। সেশনজটের প্রভাব পড়ছে অপর চারটি ব্যাচেও। দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বর্ষে থাকার কথা থাকলেও তারা রয়েছেন এখনো তৃতীয় বর্ষেই।

এদিকে ডিসেম্বরের শুরুতে নতুন বর্ষের শিক্ষার্থী ভর্তি করলে এ সঙ্কট আরো বাড়বে। ফলে সেশনজটে পড়া বিভাগটির শিক্ষার্থীরা চরম হতাশায় ভুগছেন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, যে উদ্দেশ্য নিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। সেশন জটের কবলে পড়ে সে স্বপ্ন আজ দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া না হলে এ জট আরো বাড়বে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।

শিক্ষক সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বিভাগের নতুন সভাপতি ড. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বিভাগের তিন শিক্ষক নিচ্ছেন ২৩টি কোর্সের ক্লাস। নতুন ব্যাচ যুক্ত হলে কোর্স সংখ্যা আরও বাড়বে। তাই বাধ্য হয়েই সেমিস্টার শেষ করতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি লাগছে।

তিনি আরো বলেন, দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে উপাচার্যকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েছি। কিন্তু মামলার কারণ দেখিয়ে শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে কোনো কার্যকারী ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কথা বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment