পাঠদান পদ্ধতি আধুনিকায়নের লক্ষ্যে
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
একুশ শতকের শিক্ষায় নব প্রজন্মের শিক্ষার্থীর শিখন চাহিদা পূরণে প্রয়োজন সময়োপযোগী দক্ষ শিক্ষক। শিক্ষায় প্রযুক্তির ধারণা আমাদের সমাজে একেবারেই নতুন। শৈশবে চক-ডাস্টার, বড় জোর বেত এই ত্রি-উপকরণের বাইরে আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের খুব একটা দেখা যেত বলে মনে পড়ে না। এই আবহ থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার ও এর সমন্বয় ঘটতে চলেছে।
এটুআই প্রোগ্রাম ‘বিশ্বশিক্ষক দিবস-১৬’ সামনে রেখে ৪ থেকে ৬ অক্টোবর কক্সবাজারের বিয়াম মিলনায়তনে আয়োজন করে শিক্ষক সম্মেলনের। এ বছরে এই আয়োজনের স্লোগান ছিল—শিক্ষকদের মূল্যায়ন, জাতির উন্নয়ন। সারা দেশের শিক্ষকদের নিয়ে আয়োজিত এই সম্মেলন উত্সবমুখর হয়ে উঠেছিল। তাদের দেখে মনে হয়েছে শিক্ষকতা তাদের ব্রত। নব প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের তারা বৈশ্বিক করে তুলবেন, এর জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয়ে স্বীয় অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি একে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল এ সম্মেলনে। শিক্ষা বিষয়ে সেখানে দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়—প্রথমটির বিষয় ছিল পাবলিক পরীক্ষা :যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবিউল কবির চৌধুরী; সিনিয়র স্পেশালিস্ট, এক্সাম অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন, বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। প্রফেসর ফারুক আহমেদের সঞ্চালনায় সেটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। দ্বিতীয় সেমিনারের বিষয় ছিল—শিক্ষার আধুনিকায়নে আইসিটি ও কার্যকর নেতৃত্ব। মূল প্রবন্ধের উপস্থাপক ছিলেন জিএম রাকিবুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
এটুআই প্রোগ্রাম একটি মডেল কনটেন্ট ফ্রেম ওয়ার্ক দাঁড় করিয়েছে, যার উদ্দেশ্য হলো মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টগুলোকে দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া। এ সকল কনটেন্ট নির্মাণকারী শিক্ষকদের মধ্যে ৪১ জন অসাধারণ কনটেন্ট তৈরিতে অসামান্য অবদান রাখায় পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ৪০ জন নির্বাচিত প্রধান শিক্ষক তাদের সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে মডেল কনটেন্ট নির্মাণকারী শিক্ষকদের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করার জন্য সু-নেতৃত্বের সম্মাননা পেয়েছেন।
পেডাগজি, ব্যবহারকারীদের রেটিং ও কনটেন্টের ডাউনলোড সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতি সপ্তাহে ৩ জন করে শিক্ষক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হয়েছেন। এই সম্মেলনে মোট ৭৭ জন ‘সপ্তাহের সেরা শিক্ষক’ বাতায়নে তাদের অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন। ৩৫ জন শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে ‘সেরা কনটেন্ট নির্মাতা’ পুরস্কার।
একুশ শতকের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর মধ্যে এমন কিছু জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ তৈরি হতে হবে; যা ভবিষ্যতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। সেজন্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন, শিক্ষকের শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীর শিখন দক্ষতা ও ক্ষমতা বিংশ শতাব্দীর চেয়ে ভিন্ন। তাই নতুন প্রজন্মকে আধুনিক শিক্ষায় বিশ্বগ্রামের উপযোগী করে গড়ে তুলতে তাদের ধ্যানে জ্ঞানে রয়েছে যেন এক শিক্ষাব্রত, সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে তা-ই প্রতিফলিত হচ্ছিল।