সবাই মিলে সবার পড়া
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ধানমন্ডি লেক। রাজধানীবাসীর কাছে স্বস্তির একটি নাম। সকালে ব্যায়াম আর বিকালে চলে আড্ডা আর ঘোরাঘুরি। তবে এমন সুযোগ কাজে লাগাতেও থেমে নেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। লেকে বসেই সেরে নিচ্ছে তাদের পড়াশোনা। সবারই প্রত্যাশা থাকে নিজের কাজে ষোলআনা স্বাচ্ছন্দ্য আদায়, সেখানে শিক্ষার্থীরাও চায় পড়াশোনার এক স্বাচ্ছন্দ্য পরিবেশ। যেন জীবন হারিয়ে যায় নিত্যদিনের পাঠ গ্রহণে।
ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার লেকে ঢুকতেই দেখা গেল কয়েক জন জটলা পাকিয়ে বসে আছে, বোঝা গেল তারা কিছু একটা করছে; কাছে গেলে দেখা গেল, তারা পড়াশোনা করছে। তারা এখানে কেন পড়াশোনা করছে জানতে চাইলে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী নুসরাত ইভা বলেন, চারপাশে অনেক গরম কোথাও টেকা যাচ্ছে না এমন কি বাসাবাড়িতেও, তাই আমরা কয়েকজন মিলে গ্রুপ স্টাডি করছি। পাশে আরো কয়েকজন বসে ছবি আঁকছে। তারা বলছিল, আমরা ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের চারুকলা অনুষদে পড়াশোনা করি, গরমে কোথাও বের না হতে পারায় আমরা হাতের কাজগুলো লেকে বসেই সেরে নিচ্ছি। হাজার লোকের পদচারণায় প্রাণবন্ত ধানমন্ডি লেক বিনোদনের কেন্দ্র হলেও পড়াশোনার ক্ষেত্রেও অসুবিধার জায়গা নয়। এমন উপলব্ধির কথাও জানাচ্ছিল এশিয়া প্যাসিফিকের ছাত্রী তানিয়া।
আমরা নগরবাসী যেখানে মোটরযানের ধোঁয়া, পাকা সড়কের গরম, জনসংখ্যার আধিক্য সেখানে ধানমন্ডি লেক যেন নৈসর্গিক জায়গা তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রাও কম থাকে কয়েক ডিগ্রি। যেখানে বহুপ্রজাতির পাখির কিচিরমিচির শব্দ, বিভিন্ন ধরনের গাছ, বাতাস আর সবুজ পাতার দৃষ্টিনন্দন খেলা পথচারীদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। এমন পরিবেশে পড়াশোনা যেন এক আনন্দের অংশ হিসেবেই চলছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। পড়াশোনার পাশাপাশি চলছে গল্প আর আড্ডা।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র মো. নিয়াজ বলেন, ধানমন্ডি লেকে পড়াশোনার পাশাপাশি আত্মার প্রশান্তিতে নগরজীবনে যেন এক গ্রামের আবহমান প্রকৃতি। ধুলা, ময়লা গাড়ির শব্দ যেন নগরবাসীর পিছু ছাড়ে না, সেখানে ধানমন্ডি লেকের নির্মল বাতাস যেন ঢাকাবাসীর আশীর্বাদ। নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্রী নাদিয়া আক্তার বলেন, শহুরে জীবনের ক্লান্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে, স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে মানুষ ছুটে আসে এখানে। লেকে পড়াশোনাসহ চলাফেরার জন্য উপযুক্ত জায়গা বলে মনে করেন তিনি। লেকপাড়ের এক বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, আমি মনে করি পড়াশোনা ও কাজ করার সবচেয়ে উপভোগ্য জায়গা ইতিবাচক দিক হলো এখানে এমন পরিবেশে যেখানে নিজের মতো করে সময় গুছিয়ে পড়াশোনা ও কাজ করা সম্ভব।