‘আমরা নির্ভীক, আমরা দুর্বার’
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
চলছে স্বাধীনতার মাস। স্বাধীনতার আলোক উজ্জ্বল এক দিনে আয়োজন করা হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রীতি শিক্ষাসফর। মার্চের ২৪ তারিখ। গন্তব্য দেশের প্রথম স্বাধীন জেলা যশোরের মনোহরপুর বোটক্লাব।
ঘড়ির কাটা ঠিক সকাল ৮টা। স্নিগ্ধ সকাল। বসন্তে গাছে গাছে নতুন সবুজ কচি পাতা। আশেপাশে মুঠোফোন ও ক্যামেরার শাটারের ক্লিক ক্লিক শব্দ। মনোমুগ্ধকর বাহারি পোশাক আর শিক্ষার্থীদের গুঞ্জনে মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুনে সজ্জিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি গাড়ি। প্রস্তুতি শেষ। সকাল ৮.১৫ মিনিট গাড়ির চাকা ঘুরতে শুরু করল। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক পেরিয়ে গাড়ি দুটি জিরো পয়েন্টের বাইপাস রোড ধরে যশোর অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছে। পথের মাঝে গাড়ির মধ্যে সকালের নাস্তা সেরে ফেলা হলো। শিক্ষার্থীদের হইচই, গানের তালে নাচ, সেলফি তোলা, সাথে শিক্ষকদেরও অংশগ্রহণ যাত্রাকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলছিল।
বেলা ১১.০৫ মিনিটে পৌঁছে গেলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যস্থল মনোহরপুর বোট ক্লাব। নিবিড় পরিবেশ, মিনি চিড়িয়াখানা, দোলনা, বিশাল লেক, ঝুলন্ত সেতু, সারি সারি অর্জুন গাছের সারি। আর ছোট ছোট মনোরম কটেজ। সাজানো গোছানো মনোরম পরিবেশ পেয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দের যেন সীমা নেই। ক্লাবে প্রবেশ করেই ঘোরাঘুরি, কোথায় কী আছে দেখা, ছবি তোলা আর হৈ হুল্লোড়! শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা ছিল বল ঝুড়িতে ফেলা, ছবিতে টিপ পরানো, হাড়ি ভাঙা, ম্যাজিক বক্স ইত্যাদি খেলার।
দুপুর ২টায় খাওয়া। এরপর একটু বিশ্রাম। বিকাল ঠিক ৩টায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কৌতুক, গান, কবিতা আবৃত্তি, যুগল নাচে বোট ক্লাব মাতিয়ে তোলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা। প্রাণবন্ত উপস্থাপনা অনুষ্ঠানকে করে তোলে আরো প্রাণদায়ক। বাড়তি পাওনা ছিল শিক্ষকদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ। সবশেষে ছিল মজাদার র্যাফেল ড্র’য়ের অনুষ্ঠান।
সন্ধ্যা ৬টা বেজে গেল। এখন ফেরার পালা। শিক্ষার্থীরা গাড়িতে বসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে এবার রওনা হলাম। ফিরতি যাত্রায় ছিল শিক্ষার্থীদের আড্ডা আর গানের কলি প্রতিযোগিতা। সারাদিনের কর্মকাণ্ডের পরও এতটুকু ক্লান্তির ছাপ নেই কারো চোখে-মুখে। রাত ৮টা বেজে ৪০ মিনিট গাড়ি দুটি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের হইচই যেন শেষই আর হয় না । ‘আমরা নির্ভীক, আমরা দুর্বার, আমরা এমসিজে পরিবার’ গানে উল্লসিত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন। এবার সবার বাড়ি ফেরার পালা। সময় ফুরিয়ে যায়, কিন্তু রেখে যায় কিছু সুখস্মৃতি। যার রেশ থাকে আজীবন। অনুপ্রেরণা দেয় ভালো কিছু করার।