কবিতা উৎসবের একদিন
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
এই ‘আন্তবিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি উৎসব’-এর আয়োজন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ। তাতে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, শাহজালাল, নোয়াখালী, ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউল্যাবসহ (ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ) ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় দল ছিল।
১৭ মে বেলা ২টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উৎসব হয়। দলগত আবৃত্তিতে সেরা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ। একক আবৃত্তিতে যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগরের চারুকলার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কাবেরী সুলতানা ও বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির অ্যাপারেল ম্যানুফেকচারস অ্যান্ড টেকনোলজির দ্বিতীয় বর্ষের আজমেরী সুলতানা।
একক আবৃত্তির অন্যতম সেরা কাবেরী সুলতানার আবৃত্তিতে পথচলার শুরু স্কুলে পড়ার সময়। তখন তাঁরা মানিকগঞ্জ শহরে বসবাস করতেন। সেখানে ‘বর্ণন আবৃত্তিচক্র’ নামে একটি নতুন দল তৈরি হয়। সেই দলের সঙ্গে জড়িয়ে গেলেন ক্লাস নাইনের ছাত্রীটি। সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে বাংলা কবিতা আবৃত্তিতে তিনি ২০১১ ও ২০১২ সালে সেরা হয়েছেন। ২০১৩ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ‘ধ্বনি’ তাঁর ঠিকানা। ‘ধ্বনি’ বিভিন্ন ইস্যুতে আবৃত্তির আয়োজন করে। সেগুলোতে কাবেরীও অংশ নেন। প্রথম বছর থেকেই তিনি তাঁদের সক্রিয় কর্মী।
তাঁর মতোই আরেক সেরা আবৃত্তিকার আজমেরী সুলতানা। আজমেরীর শুরুটি হয়েছিল একেবারে ছোটবেলায়। তখন তিনি টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌর একাডেমিতে প্লে গ্রুপে পড়েন। একুশে ফেব্রুয়ারির উৎসবে ‘মাগো ওরা বলে’ নামে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর বিখ্যাত কবিতাটি আবৃত্তি করে সবাইকে চমকে দিয়ে প্রথম হলেন তিনি। ২০০৭ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ও ২০১০ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায়ও ঢাকা বিভাগে সেরা হয়েছেন তিনি। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তির দল ‘পায়রা’র তিনি সক্রিয় কর্মী। তিনি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনাও করেন। তাঁর শিমুল মুস্তাফা ও ওপার বাংলার মেধা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবৃত্তি ভালো লাগে। কেন আবৃত্তি করেন—এই প্রশ্নের দারুণ এক উত্তর দিলেন আজমেরী সুলতানা—‘অনেক নির্ঘুম রাত, অনেক বেদনা, আনন্দের পর একটি কবিতা হয়ে ওঠে। সেটির ভাব, অর্থ মানুষের কাছে তুলে ধরেন আবৃত্তিকার। আমি নিজেকে শ্রোতা ও কবির সেতু মনে করি। তাই আবৃত্তিতে আছি।’ আয়োজনটি নিয়ে বলতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি আহসান রনি বললেন, ‘আমরা পুরো সংগঠনের সবার মতামত নিয়ে এই উৎসবটি করেছি। চেয়েছি, তরুণদের কাছে বাংলা সংস্কৃতি আরো ছড়িয়ে যাক, ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবৃত্তি চর্চা বিকশিত হোক, সবার মধ্যে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়ুক।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বললেন, ‘খুব সম্প্রতি কোনো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা হয়নি। ফলে আমরা বাইরে থেকে আসা অতিথিদের গেস্টরুম বরাদ্দ দিয়েছি, তাদের সব সহযোগিতা করেছি।’ উৎসবে বিচারক ছিলেন মাহিদুল ইসলাম ও শুক্লা সরকার। মাহিদুল ইসলাম জানালেন, ‘আরো ভালোভাবে এই উৎসবগুলোর আয়োজন করতে পারলে আমরা ভালো বাচিক শিল্পী পাব।’