জাতিসংঘের ছোট্ট রূপ
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
গত ৭-৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় বসেছিল বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মিলনমেলা। স্থান ছিল একাডেমিয়া স্কুল। না, সত্যিই কোনো বিদেশি অতিথি ছিলেন না বটে, আমাদের দেশের তরুণেরাই একেক দেশ নিয়ে পড়ালেখা করে সেই দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আলোচনা করেছেন, কথা বলেছেন সেই সব দেশের পক্ষ হয়ে, সেই সব দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের কথা মাথায় রেখে। ঠিক যেন জাতিসংঘের ছোট্ট এক রূপ। শিক্ষার্থীরা যাকে বলেন মডেল ইউনাইটেড নেশনস বা ছায়া জাতিসংঘ।
লাইট হাউস ইম্পেরিয়াম মডেল ইউনাইটেড নেশন বা এলএইচআইএমইউএন হলো আয়োজনটির শিরোনাম। আয়োজক হিসেবে ছিলেন মূলত তরুণদের দ্বারা পরিচালিত সংগঠন লাইট হাউস ইম্পেরিয়াম ফাউন্ডেশন। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক বিতর্ক, আলোচনা ও সমালোচনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ের সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হয়। প্রায় ২৫০ জন প্রতিনিধির উপস্থিতি ছিল এবারের সম্মেলনে, যাঁদের মধ্যে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নন, ছিল বেশ কিছু স্কুল–কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও। একাডেমিয়ার নিজস্ব অংশগ্রহণ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হলিক্রস কলেজ, নটর ডেম কলেজসহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল এই ছায়া জাতিসংঘে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে কথা হলো সম্মেলনের সেক্রেটারি জেনারেল ফাহমিদা ফাইজার সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘আমাদের এবারের সম্মেলন তরুণদের শুধু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে অবহিতই করেনি, বরং সেগুলো নিয়ে তাঁদের গবেষণা, আলোচনা, সকলের সামনে কথা বলার দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে।’ তিনি আরও বললেন, ‘তারুণ্য, শান্তি এবং নিশ্চয়তা (ইয়ুথ, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি)’—এই থিমের ওপর ভিত্তি করে সব প্রতিনিধিকে চারটি ভিন্ন ভিন্ন কমিটিতে ভাগ করে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি কমিটিতেই ছিল মডেল সম্মেলনের নিয়মানুযায়ী নির্বাচন করে দেওয়া নির্বাহী বোর্ড সদস্য।’
সম্মেলনের প্রধান উপদেষ্টা এস আই এম শাদমান শেখ বলেন, ‘কনফারেন্সে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য এই সম্মেলনগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা ও পাবলিক স্পিকিং চর্চা করতে সহায়তা করে এবং নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। শুধু তা–ই নয়, কী করে সমঝোতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান বের করে আনা যায়, সে বিষয়েও ধারণা নিতে শেখেন অংশগ্রহণকারী তরুণেরা।’
কথা হলো ‘কমিটি চেয়ার’দের মধ্যে শাইয়ান সাদিকের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিন ছিল মূলত দুটি সেশন। আর পরদিন হয়েছিল আলাদা তিনটি সেশন। প্রতিটি সেশনেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে তার সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়। আমি বলব, এ ধরনের মডেল ইউএন শিক্ষার্থীদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।’