“বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দেয়া রাজনৈতিক কৌশলের পরিচয়”
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা না করলেও জনগণকে প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন একটি আসন্ন যুদ্ধ মোকাবেলার জন্য। তিনি বলেন, “ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল”, “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। তাঁর এ ঘোষণা পাকিস্তানি অপশাসন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাঙালিকে উজ্জীবিত ও ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছিল। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ (জেএমসি) বিভাগ আয়োজিত গত ৭ ডিসেম্বর এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ওয়েবিনারটির শিরোনাম ছিল “বঙ্গবন্ধু-লিঙ্কনের ভাষণঃ একটি রাজনৈতিক যোগাযোগীয় বিশ্লেষণ”। ডিআইইউ ক্যাম্পাস টিভিতে এটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
রাজনৈতিক যোগাযোগের দক্ষতা ও কৌশলের আলোকে বক্তারা বিশ্বের দুইটি ঐতিহাসিক ভাষণের উপর আলোচনা করেন। ভাষণ দুটি হল- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের গেটিসবার্গ ভাষণ। আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও জেএমসির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব সাখাওয়াত মুন। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জেএমসি বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. শেখ শফিউল ইসলাম। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন জেএমসির সহকারি অধ্যাপক ড. তৌফিক এলাহি। জেএমসি শিক্ষার্থী মেহেরাব রাফি ও শারমিন নিশু শিক্ষার্থী আলোচক হিসেবে অংশ নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ভাষণ দুটির রাজনৈতিক যোগাযোগের বিভিন্ন আঙ্গিক তুলে ধরেন।
আলোচনায় সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও জেএমসির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, “বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারতেন। কিন্তুঘোষণা করলে তখন পাকিস্তানি শাসকরা এই অজুহাতে বাঙালি নিধনে মেতে উঠতে পারত। বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত কৌশলী রাজনীতিবিদ ছিলেন। তাই তিনি ঐ মুহূর্তে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে জনগণকে আসন্ন যুদ্ধ মোকাবেলার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতির ডাক দিয়েছিলেন।’’ তিনি আরো বলেন, “যার যা আছে, তা নিয়ে প্রস্তুত থাক, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল… ইত্যাদি আহবানের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব সাখাওয়াত মুন বলেন, “বঙ্গবন্ধু কোন কিছু লিখে নিয়ে যাননি ভাষণে। কিন্তু তিনি অল্প সময়ে জনগণের সামনে ঐ সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেছিলেন।তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির ওপর বেশি জোর দিয়েছেন। কারণ অর্থনৈতিক মুক্তিই মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা ও মুক্তি নিশ্চিত করতে পারে।