করোনাকালেও এগিয়ে যাচ্ছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়
- কাজী মো. দিলজেব কবির রিপন
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ বছর ৩০ মার্চ খুলে দেওয়ার ঘোষণা ছিল। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ছুটি ২২ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পৃথিবীব্যাপী কোভিড-১৯ এর প্রভাবে যে কোনো খাতের তুলনায় শিক্ষা খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রভাবিত। করোনা মহামারীতে প্রায় ১৪ মাস যাবত বন্ধ আছে সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রম যা শিক্ষাখাতে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চ্যালেঞ্জ উত্তরণের লক্ষ্যে সরাসরি পাঠদানের বিকল্প হিসেবে অনলাইন পাঠদান পদ্ধতি প্রণয়ন করে। এখানে আমি দেশের স্বনামধন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র তাদের নিজস্ব উদ্ভাবিত ব্লেন্ডিং লার্নিং সিস্টেম (বিএলসি) ব্যবহার করে ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইন এডুকেশনকে উদাহরণ হিসেবে আনতে চাই। ব্লেন্ডিং লার্নিং সিস্টেমের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা তাদের কোর্সের ক্লাসে অংশগ্রহণ, শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে যোগাযোগ ও আইডিয়া শেয়ারিং, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও তাদের মূল্যায়ন বা ফলাফল সম্পর্কেও জানতে পারে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও লকডাউন শুরুর কিছুদিন পর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রথমে অনলাইনে ক্লাস এবং পরে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।সংক্রমণ কমার পর গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনার্স শেষ বর্ষ/সেমিস্টার এবং মাস্টার্সের সরাসরি ল্যাব ক্লাসগুলো ও পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি প্রদান করে। পুনরায় সংক্রমণ বাড়ার ফলশ্রুতিতে দেশে পুনরায় লকডাউন বহাল করে।বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৬টি, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৬টি ও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩টি। বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষার ক্ষেত্রে মোট ছাত্র-ছাত্রীর আনুমানিক ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। এত বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীর শিক্ষা সুবিধা নিশ্চিতকল্পে সরকারের এই খাতেও বিশেষ প্রনোদনা প্রদান জরুরি হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকার মেয়াদ আরো দীর্ঘায়িত হয় সরকারকে অনলাইন শিক্ষা সহজতর করার জন্য কম খরচে শিক্ষাবান্ধব ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এবার অন্যান্যবারের মতো যথা সময়ে এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি, এতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাত্র প্রাপ্তির ব্যাপারে একটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন চ্যালেঞ্জকে মানিয়ে নিয়ে সামার, ফল ও স্প্রিং সেমিস্টার ভর্তি প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা এবং অভিভাবকরা সম্পূর্ণরূপে অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এডমিশন, টাকা প্রদান, রেজিস্ট্রেশন, অনলাইন এডুকেশন সবই গ্রহণ করতে পারছে। উদাহরণস্বরূপ বলতে পারি সামার-২০২০ ও স্প্রিং-২০২১ সেমিস্টারের ছাত্র ভর্তির কথা, লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীরা ও অভিভাবকরা ভর্তি তথ্য ও ভর্তি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম অনলাইনে সম্পাদন করতে সমর্থ হচ্ছে। আমি এখানে কর্মরত আছি তাই, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ হিসেবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে বলতে পারি। লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল, তবুও সকল বাধা উপেক্ষা করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষত যারা নিজেদেরকে আইটি সমৃদ্ধ করতে পেরেছে শুধু সেসকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পেরেছে। সামার-২০২০ সেমিস্টারের কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করে ফল-২০২০ সেমিস্টারের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পেরেছে। বর্তমান স্প্রিং সেমিস্টারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র ৫টি অনুষদভুক্ত ২৪টি বিভাগে ৩৬টি প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশনকৃত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৮৭৩৩ জন।
কোভিড সংকটেও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও বিশ্বমানের ডিজিটাল শিক্ষা কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে উত্তরণের পথ খুঁজে দিয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। ৩০০০০ জন পাশ করে যাওয়া গর্বিত এলামনাই ও ১৮৭৩৩জন বর্তমান শিক্ষার্থী নিয়ে ডিআইইউ পরিবার কোভিড সংকট কাটিয়ে উঠছে দৃঢ় প্রত্যয়ে।
কাজী মো. দিলজেব কবির রিপন
বিবিএ, এমবিএ (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়)
ঊর্ধ্বতন সহকারী পরিচালক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি