চোখজুড়ানো প্রাঙ্গণ
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
হাজারো শিক্ষার্থীর সঙ্গে ভর্তিযুদ্ধে টেক্কা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তির সুযোগ পাওয়াটা স্বপ্ন পূরণের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল না।২০১৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন। স্টেশনে পৌঁছালাম সকাল সাতটার দিকে। বটতলী স্টেশন আর শাটল ট্রেন—চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্পে দুটি অবধারিত উপাদান। ট্রেন শিডিউলের বেশ কিছুক্ষণ আগে পৌঁছেছিল। রঙিন একটা বগিতে জানালার পাশের সিটে বসে পড়লাম। নিজের শহর বলেই হয়তো অতটা বিচ্ছিন্ন বা নিজেকে ততটা নতুন মনে হয়নি। যদিও কোনো পরিচিত মুখ দেখতে না পেয়ে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। একই কারণে রোমাঞ্চটা যে আরও বেড়ে গিয়েছিল, সেটাও ঠিক!
হঠাৎ কয়েকজন ভাইয়া-আপু এসে গান ধরল। পেছনের দিকে দুজন তাল মিলিয়ে তালি বাজানো শুরু করল। অদ্ভুত উন্মাদনা সেই গানে! দেখতে দেখতেই শহুরে জঞ্জাল পেরিয়ে শাটলটা ঢুকে পড়ল বিস্তীর্ণ সবুজে। মাঝে কটি স্টেশন পেরিয়ে ট্রেন যখন চবি স্টেশনে পৌঁছাল, তখন প্রায় সকাল সাড়ে নয়টা বাজে। ট্রেনের বগিতে কথা বলতে বলতে ব্যবস্থাপনা বিভাগে নতুন ভর্তি হয়েছে, এমন একজনকে পেয়ে গিয়েছিলাম। দুজন মিলে কাটাপাহাড় ধরে হেঁটে গিয়ে বিবিএ ভবনের তৃতীয় তলায়, মানে ব্যবস্থাপনা বিভাগে চলে এলাম। নবীনবরণ হচ্ছিল পরীক্ষার হলে, খুঁজে পেতে সময় লাগেনি। শুরুতে খুব বেশি লোক ছিল না, কিন্তু দেখতে দেখতে পুরো ঘর ভরে গেল।
ফুল দিয়ে আমাদের নবীনদের বরণ করে নিলেন এক ব্যাচ সিনিয়রেরা। শিক্ষকেরা এলেন। তাঁদের কথা শুনতেও ভীষণ ভালো লাগছিল। বড়রা অনুষ্ঠান শেষ করলেন মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে। আনন্দমুখর, কিছু অবিস্মরণীয় স্মৃতি মনের খাতায় জমা হয়ে গেল সারা জীবনের জন্য।
সব শেষে যখন চারটার ট্রেনে ফেরার পথ ধরেছি, ততক্ষণে বেশ কজন বন্ধু জুটে গেছে। সবাই মিলে একসঙ্গে গান ধরলাম, ‘হতাম যদি রঙিন প্রজাপতি…ফুলে ফুলে মাতামাতি’, এখনো মনে হয় কান পাতলে সেদিনের গান শুনতে পাই। সত্যি, এতটুকুও মলিন হয়নি প্রথম দিনের স্মৃতি।
তাসনিয়া প্রিয়তা
ব্যবস্থাপনা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়