ছুটির দিনে ক্যাম্পাস হয়ে উঠে দর্শনীয় স্থান
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি বিশেষত্ব হল ছুটির দিনগুলো। এ দিনে ক্যাম্পাস মুখরিত হয়ে ওঠে দর্শনার্থীদের পদচারণায় । তারা ব্যাস্ততার মাঝে একটু সময় নিজেদের নিয়ে ভাবতে ভালবাসে। ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে অন্যতম দর্শনীয় স্থান। তারা হয়তো হবে ফ্যামেলি টূর, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা স্কুল কলেজে শিক্ষা ভ্রমণ, বিভিন্ন সংগঠন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে হাত ধরে হাঁটার জন্য আসা কতিপয় তরুণ-তরুণী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার বলা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে।
ক্যাম্পাসে ঢুকতেই আপনাকে স্বাগত জানাবে প্রবেশ পথের দু-ধারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়া এবং রাঁধাচূড়া ফুল। আপনি যদি কৃষ্ণচূড়া এবং রাধাচূড়া ফুলের মাঝে নিজেকে আর একটু পথ হারিয়ে নিতে চান তাহলে অবশ্যই ক্যাম্পাসের পদ্ম চত্বর হয়ে জাবি স্কুল এন্ড কলেজের দিকে হাঁটতে হবে। বলে রাখা ভাল পদ্ম চত্বরে দেখতে পাবেন একসাথে ‘কয়েকশ’ পদ্ম ফুল ফুটে আছে, ইচ্ছে করলে আপনি কবি সুনীল গঙ্গপাধ্যায়ের মতো বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে নয় নিমিশেই খুঁজে নিতে পারেন ১০৮টি লাল পদ্ম। বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এর পরিবেশ, প্রকৃতি, অবকাঠামো এবং রাস্তা-ঘাটগুলো অন্য বিশ্ববিদ্যাগুলো থেকে আলাদা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর একটি বিশেষত্ব হল এখানের সব ভবনগুলো লাল রঙ্গের। উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন স্থানগুলোর মধ্যে আছে সপÍম ছায়া মঞ্চ, সেলিম আল দীন মুক্ত মঞ্চ, ক্যাফেটারিয়া, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, সুইমিংপুল, বোটানিক্যাল গার্ডেন, পিঠা চত্বর, ছবি চত্বর, সুপারি বাগান, অসংখ্য গাছে ঘেরা মনপুরা দ্বীপ, টারজান পয়েন্ট এবং বিভিন্ন ছোট-বড় ১৭টি লেকসহ তিন-চারটি পুকুর। ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে লেকগুলোতে নৌকা এবং লেকের পাশে বসার জন্য বেঞ্চ। পিপলস চয়েজ অফ বাংলাদেশে সবচেয়ে সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।এখানের হলগুলো সতন্ত্র গঠনের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল প্রজাপতির আকৃতিতে তৈরি হওয়ায় ছেলেদের এই হলটিকে বলা হয় বাটারফ্লাই হল। তাই এই হল দেখার জন্য দর্শনার্থীদের মধ্যে কাজ করে অন্য রকম আকর্ষণ। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব বৃহৎ বিজ্ঞান গবেষণাগার এখানে অবস্থিত। বাংলাদেশের একমাত্র ডিএনএ বারকোড গবেষণাগার ও প্রজাপতি পার্ক নির্মিত হচ্ছে জাবিতে। ছুটির দিনগুলোর মধ্যে বিশেষ করে শুক্র এবং শনিবার মানুষের পদচারণা বেশি থাকে। ক্যাম্পাস মুখরিত থাকে পায়ে হাঁটা উৎসুক শব্দ এবং বুলির কলতানে। তাদের বেশির ভাগের লক্ষ্য থাকে জাবির রাস্তাগুলোর প্রতি; কেননা রাস্তাগুলো আঁকা-বাঁকা এবং সরু প্রকৃতির।
একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘুরতে আসা অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র বাদল হাজং বাপ্পির কাছে ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলো সবচেয়ে বেশি সুন্দর। তার কণ্ঠে, “আমি জাহাঙ্গীরনগরে ঘুরতে আসি। কারণ, আমি ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোর প্রেমে পড়ে যাই।” ছুটির দিনগুলোতে বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে শিক্ষা ভ্রমণে আসা শিশুরা ছুটে বেড়ায় ক্যাম্পাস জুড়ে। ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে যুক্ত হয় বেলুন, ফেস্টুুন এবং বাচ্চাদের কচি মুখের চিৎকার চেঁচামেচি। আজকাল ছুটির দিনে স্কুল, কলেজ এবং কিন্ডার গার্টেন থেকে আসা পাঁচ থেকে ছয়টি গ্রুপ প্রায়ই থাকে। পাশাপাশি পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসেন অনেকে।