বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা পেল এমবিলিয়ন্থ অ্যাওয়ার্ড
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
গত ২৩ জুলাই নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের তরুণ আইটি উদ্যোক্তাদের ‘ভ্যাট চেকার’ অ্যাপটি এমবিলিয়ন্থ অ্যাওয়ার্ড সাউথ এশিয়া ২০১৬ অর্জন করে। ২০১০ সাল থেকে মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় এবং এটিই হলো মোবাইল খাতের উদ্ভাবন নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় সম্মাননা। ভ্যাট প্রদান নিশ্চিতকরণ এবং ভুয়া মূসক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করণে বাংলাদেশি তরুণদের উদ্ভাবিত ‘ভ্যাট চেকার’ অ্যাপটি সরকার ও নাগরিক সম্পৃক্ততা ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার অর্জন করে।
যেকোনো কেনাকাটা করলে কিছু টাকা সরকারের কোষাগারে ভ্যাট হিসেবে জমা দিতে হয়। কিন্তু আমাদের দেওয়া ভ্যাট সরকারের রাজস্ব বোর্ডে সঠিকভাবে জমা হচ্ছে কি না, নাকি জনগণকে বোকা বানিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো তা হাতিয়ে নিচ্ছে। তা আমাদের কাছে অস্পষ্ট। আর এই অস্পষ্টতা থেকে জনগণকে বেরিয়ে আনতে এবং সরকারের সঠিক রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশি তরুণ আইটি উদ্যোক্তা জুবায়ের হোসেন ও আসিফ কামাল তুর্য এই মোবাইল অ্যাপটি তৈরি করেন। শুরুতে মারজিয়া প্রভা আর ইশতিয়াক নিশা থাকলেও, এখন তারা ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে টিমে নেই। তবে তারা মার্কেটিং সহযোগিতা নিয়মিতই করছেন। এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কাজ করার জন্য প্রথমে আপনাকে ‘ভ্যাট চেকার’ (Vat Checker) অ্যাপটি ইন্সটল করতে হবে। তারপর পণ্য বা সেবার গায়ে লেখা থাকা বিআইএন বা মূসক প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নম্বরটি বিআইএন নম্বর দেওয়ার বক্সে টাইপ করতে হবে। এর পর চেক বাটনে ক্লিক করতে হবে। যদি প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন সঠিক থাকে তাহলে তা প্রদর্শিত হবে। আর যদি সঠিক নিবন্ধন না থাকে তাহলে কোনো তথ্য দেখাবে না। সেক্ষেত্রে ভুয়া চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অ্যাপটির মাধ্যমেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা যাবে।
সম্প্রতি ‘এমবিলিয়ন্থ অ্যাওয়ার্ড সাউথ এশিয়া ২০১৬’ অর্জনটি গ্রহণ করতে নয়াদিল্লিতে যান ভ্যাট চেকার অ্যাপের প্রধান ডেভেলপার জুবায়ের হোসেন। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের মুখকে উজ্জ্বল করে এবং নতুন দেশীয় আইটি উদ্যোক্তাদের মধ্যে দ্বিগুণ অনুপ্রেরণা আর সম্ভাবনা জাগিয়ে পুরস্কার নিয়ে দেশে ফিরেছেন।
বিদেশের মাটিতে এত বড় অবদান এবং ক্যাটাগরিতে প্রথম হওয়ার পরও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটা ক্ষুদে অভিনন্দন বার্তা না পেয়ে তার ফেসবুক পাতায় ক্ষোভ জানিয়েছে জুবায়ের। সামনে এগোনোর সাহস যারা দিচ্ছে, তাদের নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
ভ্যাট চেকার অ্যাপ্লিকেশনের সফলতার বিষয়ে জুবায়ের বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং মূসক গোয়েন্দাদের সঙ্গে বেশ কিছু অভিযানে সরাসরি অংশ নিয়েছে ‘ভ্যাট চেকার’ টিম। চার থেকে পাঁচটি অভিযানে দেশের রাজস্ব এসেছে ত্রিশ কোটি টাকার উপরে। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত ভ্যাট ফাঁকির আলামত ধরিয়ে দিচ্ছে এই অ্যাপের মাধ্যমে। অভিযান পরিচালনা করছে এনবিআর। ‘ভ্যাট চেকার’ টিমকে সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা এবং স্বীকৃতি দিয়েছে স্বয়ং রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান।’ নিজেদের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা বিষয়ে তিনি জানান, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এদেশের মানুষকে ডিজিটাল সেবা উপহার দেওয়ার জন্য আমরা আজীবন কাজ করে যাব।’