ওদের ইচ্ছে আছে
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
- রুবাইয়া জ. দীপা
আমার ছোট একটি অনলাইন শপ আছে যার নাম ওপাল ফ্যাশন ওয়্যার। আমার উদ্যোগ ছিল খুবই সীমিত মূলধন নিয়ে ঘরে বসে একটা ছোট ব্যবসা শুরু করে নিজেকে সাবলম্বী করা। মাত্র ৫০০০ টাকা নিয়ে হিজাবের ব্যবসা শুরু করি। প্রথম এক বছর শুধু লোকসান ই করেছি। পরের বছর যখন আস্তে আস্তে কিছুটা পরিচিতি পেলাম, বুঝলাম কি পণ্য বিক্রি বেশি হয়, কিছু নিয়মিত ক্রেতা পেলাম, প্রকৃতপক্ষে তখন থেকেই শুরু। এতোদিন আমরা দেশের বাইরে থেকে পণ্য এনে বিক্রি করতাম; কিন্তু বর্তমানে আমরা জামা তৈরির কারখানা করেছি খুব ছোট পরিসরে- মাএ ৪ জন কারিগর নিয়ে। ইচ্ছে আছে আমদানী কমিয়ে দিয়ে দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করার। আমার স্বপ্ন এমন একটা জায়গায় যাওয়া, বিশ্বস্ত অনলাইন শপিং ও সব থেকে সময়োপযোগী কালেকশনের নাম চিন্তা করলেই মানুষের মনে যেনো ওপালের নাম সবার আগে আসে।
- মিতাশা রহমান
পড়া-লেখার পাশাপাশি নিজের সংসারও সামলাচ্ছি। বিয়ের পর নিজের অবসর সময়ে কিছু করব ভেবেই শখ করে শুরু করি অনলাইন বিজনেস। প্রথমে নিজেই পেইজ খুলে টুকটাক হাতের বানানো জিনিস বিক্রি করে যখন সকলের কাছে ভাল সাড়া পাই, তখনই লক্ষ্য স্থির করে নেই এটাকেই তার পেশা হিসেবে। পরে স্বামী ও সকলের অনুপ্রেরণায় ও বিভিন্ন সৃষ্টিশীল কাজের মাধ্যমে সকলের কাছে ভাল পরিচিতি পাই। হিজাব শপ অনলাইন স্টোর নামক ১ বছর বয়সী এ ব্যবসার পেইজে প্রায় ৮০ হাজার ফলোয়ার রয়েছে। ইচ্ছা ভবিষ্যতে বড় কিছু করার।
- মাইমুনীহ মীম
বিজনেস শুরু মূলত এসএসসি পরীক্ষার পরে। ছোট বোনকে হিজাব পিন বানিয়ে দিয়েছিলাম যা তার বান্ধুবীদের অনেক পছন্দ হয়। সেই থেকেই শুরু। আম্মু এক হাজার টাকার প্রোডাক্ট কিনে দেয়। তারপর সাহস করে অনলাইনে শুরু করলাম হিজাবীস ক্লোজেট নামক পেইজ দিয়ে। তারপর বাহির থেকে হিজাব আনাও শুরু করলাম। এইচএসসি পরীক্ষার পর আরো বড় করে কিছু করব। নিজের কাসটোমাইজড হিজাব এন্ড মডেস্ট ড্রেস দিয়ে একটা শপ করার ইচ্ছা। তাছাড়াও খুব ইচ্ছা একটা কফিশপ করার। ছোটবেলা থেকেই নিজে থেকে কিছু করার ইচ্ছা ছিল আর তাই করছি আর করব।
- সানজীদা ইকবাল তিথি
স্টাইলাইন কালেকশন-এর যাত্রা শুরু হয় ২০১৫-এর এপ্রিল থেকে। স্টাইলাইন স্টার্ট-আপ প্রথম থেকেই বাংলাদেশের একটা নিশ মার্কেটকে টার্গেট করে যাত্রা শুরু করেছে। স্টাইলাইন-এর ভিশন হলো, মডেস্ট লাইফ-স্টাইল এ, বাংলাদেশের ‘ওয়ান স্টপ সোলিউশন’ অথবা ‘হোম টু হিজাব লাইফ স্টাইল’ হওয়া। সম্প্রতি মালয়েশিয়ান গ্লোবাল ইনোভেশন এন্ড ক্রিয়েটিভিটি সেন্টার (ম্যাজিক) এক্সেলারেটোর প্রোগ্রামের চার মাসের বিজিনেস বিল্ডিং প্রোগ্রামে স্টাইলাইন অংশগ্রহণ করেছে এবং সাথে ফাউন্ডার ইনস্টিটিউশন-এর ফাউন্ডার এক্স প্রোগ্রামেও সিলেক্ট হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকেই এই প্রথম কোনো স্টার্ট-আপ এমন কিছু অর্জন করল। আমার মাস্টার্সের পর স্টাইলাইনের সাথেই আমার প্রথম কর্ম জীবন শুরু হয়। একটা স্টার্ট-আপ-এর শুরু থেকে থাকাটা যেমন আনন্দের তেমনই চ্যালেঞ্জিং। এখানে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখছি। কাজের কোনো একঘেঁয়েমি নেই। একটা টিম-এর সাথে একসাথে কাজ করা এবং স্টাইলাইনের প্রথম এমপ্লোয়ি হিসেবে অন্যকে মেন্টর করার দায়িত্বটা কিছুটা বেশি। এক বছরের উপর হয়ে গেল স্টাইলাইনের সাথে। বর্তমানে ম্যানেজার হিসেবে সেলস ও একুইজিশন ডিপার্টমেন্ট এ আছি। কাস্টোমারদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখতে হয়। তাদের মাধ্যমে অনেক শেখা যায় এবং জানা যায়। ভবিষ্যতে স্টাইলাইনকে আরো বড় করে এগিয়ে নেওয়াই আমার পরিকল্পনা।
- নোশিন নাওয়াল খান
শখের বশত আমি সর্বপ্রথম যখন অনলাইনে ব্যবসা শুরু করি, নিজের হাতে তৈরি বো-পিন আর গোলাপের ব্রুচ দেখাই। এবং কাস্টমারের অনুরোধে প্রথমবার হিজাব আনি। প্রথমবারেই ব্যাপক সারা পাওয়ায় উত্সাহ আরো বেশি পাই এবং আমার ব্যবসায় আমি পারিবারিক ভাবেও সাহায্য পাই। এখন আমার পেজ-এ সব কিছুই পাওয়া যায়। আমি এখন গাউন, স্কার্ট, নেকলেস এবং বিভিন্ন ধরনের কাপড় এবং জুয়েলারি বাইরে থেকে এনে আমার কাস্টমারদের দিচ্ছি। দিনের পর দিন ব্যবসা বৃদ্ধির মাধ্যমে আজ এখানে এসে পৌঁছেছি, আমার কাস্টমারদের বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি। এটি অব্যাহত রাখতে চাই।
- নম্রতা খান
নিজের হস্ত শিল্পের উপর ফেসবুকে একটি অনলাইন বিজনেস পেজ খুলি। ট্রেন্ডি ব্রুচারস এন্ড হিজাব অনলাইন বিডি শপ খুব দ্রুত পরিচিতি লাভ করে ফেলল। আরো ভাল কিছু করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে হিজাবিস্তা। ফ্যাশনিস্তা নামক একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলি। এখানে যারা হিজাব করেন, ইসলাম-এর পথে আছেন, আবার ফ্যাশনাবল মেয়েরাও আছেন যারা মডার্ন দুনিয়ার আইকন। স্থাপত্যবিদ্যায় পড়াশোনা করতে করতে এই উদ্যোগটি নিয়েছি যাতে মেয়েরা একসাথে মিলে-মিশে থাকতে পারে। মহিলাদের জন্য ভাল একটি মঞ্চ স্থাপন করতে পারি যা দিয়ে মেয়েরাও এগিয়ে যাবে সফলতার দিকে।