নোমানের পাটের সাইকেল
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
বাংলাদেশের মানুষ দরজিবাড়িতে কাপড় বানিয়ে অভ্যস্ত। কম্পিউটারও হয়তো বানিয়ে নেয় (সংযোজন) দোকান থেকে। কিন্তু বাইসাইকেল না। সাইকেলটা লোকে এখনো রেডিমেডই কেনে। নিজের চাহিদামতো সাইকেল বানিয়ে নেওয়া বা অর্ডার দেওয়ার চলটা এখনো শুরু হয়নি। তারপরও কেউ কেউ সাইকেল বানাচ্ছেন। তাঁদেরই একজন আবু নোমান। বছর দুই ধরে হাতেই বানাচ্ছেন (হ্যান্ডমেইড) সাইকেল। এই তরুণের কাজ একটু আলাদা। সাধারণ সাইকেলের পাশাপাশি তিনি পাট দিয়ে সাইকেল বানিয়েছেন। পাঁটের আঁশ দিয়ে দ্বিচক্রযানের নমুনা সফলভাবেই তৈরি করতে পেরেছেন তিনি।
বানানোর প্রক্রিয়াটা জানতে চাইলে নোমান বলেন, খুব সহজ বিষয়। একটা দালান তৈরিতে রড লাগে। রড হচ্ছে একটা ভবনের কঙ্কাল। আর বালু, সিমেন্ট, খোয়া এসবের মিশ্রণ তো লাগেই। বিশেষ এই ফ্রেমে পাটকে রডের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। আর ইপক্সি রেজিন নামের শক্তিশালী আঠাটা হচ্ছে সেই মিশ্রণ। মূলত এই দুইয়ের মিশেলে ফ্রেমটা দাঁড়িয়েছে। এখন তাঁর এই উদ্ভাবনের প্যাটেন্ট পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
পাট দিয়ে ঢেউটিন বানানো গেলে সাইকেলও বানানো সম্ভব বলে মন্তব্য করলেন বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিিটউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন। তবে এটা কতটুকু পরিবেশবান্ধব সেটা বিবেচনা করতে হবে। কারণ, পাটের তৈরি ফ্রেমটা মাটির সঙ্গে না মিশে গেলে পরিবেশের ক্ষতির দিকটি থেকেই যায়। নোমান অবশ্য দাবি করেছেন, ব্যবহার শেষে ফ্রেমটা টুকরো টুকরো করে ফেলে দিলে মাটির সঙ্গে মিশে যাবে।
ঢাকার আদাবরের ১৩ নম্বর সড়কে ছোটখাটো একটি কারখানা আছে। সেখানে বসেই গত দুই বছরে ১০০-এর বেশি স্টিলের সাইকেল বানিয়ে গ্রাহকের হাতে তুলে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে পাটের সাইকেলও মানুষের হাতে তুলে দিতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। একদিন বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যান্ডমেইড সাইকেলের কারখানা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন উদ্যমী এই তরুণ।