নাসিমুলের পাটের লড়াই
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু শিল্পায়নের যুগে এই ফসলের চাষাবাদ কিংবা গুরুত্ব প্রায় হারিয়ে যেতেই বসেছিল। কিন্তু পাটের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার টিকিয়ে রাখতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বেশকিছু পদক্ষপ নেওয়া হয়েছে। কাজ করে যাচ্ছে নানা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন। পাটপণ্যের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও উদ্যোক্তা ও পাটশিল্পের উন্নয়ন গবেষণা, পাটের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সংযুক্তি বাড়াতে নানা কাজ করছে ‘পাটের লড়াই’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
নাসিমূল আহসান নামের একজন তরুণ ২০১৬ সালে তার এই স্বপ্নযাত্রা শুরু করেন। পাটপণ্য মেলায় ঘুরতে ঘুরতে তার মনে হলো পাট নিয়ে কিছু করা ও তরুণ প্রজন্মের মাঝে পাটকে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। প্রথমে পাটপণ্য ব্যবহারে মানুষকে উত্সাহী করতে তৈরি করেন একটি অনলাইন তথ্য কেন্দ্র, যেখানে নিয়মিত পাটসংক্রান্ত নানা তথ্য প্রকাশিত হয়। বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় ১০ হাজার মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাহায্যে যুক্ত আছে পাটের লড়াইয়ের নানা কার্যক্রমের সঙ্গে। পাট চাষ থেকে শুরু করে পাটপণ্য উত্পাদন ও বিপণনের নানা পরামর্শ দেওয়ার কাজ করে থাকে পাটের লড়াই। এছাড়া নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে পাটপণ্য প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করা হচ্ছে।
পাটপণ্য নিয়ে কাজ করেন, পাটকে ভালোবাসেন এমন বিভিন্ন সেক্টরের মানুষকে নিয়ে ‘পাটবন্ধু’ নামে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শিশুদের মাঝেও পাটকে ছড়িয়ে দিতে চালু করেছে ‘শিশুর জন্য পাটপণ্য’ কার্যক্রম। যার মাধ্যমে স্কুলে স্কুলে গিয়ে শিশুদের বিনামূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়া হয়। প্রথম জাতীয় পাট দিবসে ‘পাটের ক্যানভাসে বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের তরুণ ২০ চিত্রশিল্পীর পাটের ক্যানভাসে আঁকা ৩৬টি ছবি স্থান পায়। এছাড়া পাট বিষয়ে উদ্যোক্তা, পাট গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের ভাবনা, মতামত সংশ্লিষ্ট মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘পাটকথা’ নামের একটি পাটবিষয়ক নিয়মিত প্রকাশনা বের করছে পাটের লড়াই। গ্রামীণ নারীরা যাতে সহজে তাদের উত্পাদিত পাটপণ্য সহজে বিক্রি করতে পারেন, সেজন্য ‘ইউজুট’ নামে বাংলাদেশের প্রথম পাটপণ্যের অনলাইন মার্কেটপ্লেস তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে।
পাটের লড়াইয়ের প্রতিষ্ঠাতা নাসিমূল আহসান বলেন, ‘গোটা পৃথিবীতে পরিবেশবান্ধব পণ্যের যে চাহিদা, পাট সেখানে খুব বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই এই সেক্টরে বেশি বেশি সৃষ্টিশীল আর উদ্যোমী মানুষের দরকার।’