বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের কর্মক্ষেত্র

বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের কর্মক্ষেত্র

  • উদ্যোক্তা ডেস্ক

এক সময়ের ঘরকন্না বাঙালি নারী এখন শিল্পোদ্যোক্তা। শহর থেকে শরু করে গ্রামেও বাড়ছে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা। বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের কর্মক্ষেত্র। মুদি দোকান থেকে শুরু করে হস্ত ও কুটির শিল্প, গাড়ির যন্ত্রপাতি, রিয়েল এস্টেটসহ ভিন্নধারার ব্যবসায়ও যুক্ত হচ্ছে এখন নারীরা। দেশের প্রায় অর্ধেক নারী উদ্যোক্তা এখন হাতের কাজ, টেইলারিং, ব্লক, বাটিক, ক্যাটারিং সার্ভিস, খাদ্য তৈরি, বিউটি পার্লার, ফিটনেস কাব, নির্মাণশিল্প, প্রিন্টিং অ্যান্ড পালিশিংয়ের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। নিটঅয়্যার ও পোশাকশিল্প, ওষুধ প্রস্তুত ও প্রসাধন, সেবা ও রোগ নির্ণয় সংক্রান্ত ব্যবসা, কৃষিভিত্তিক ব্যবসায়ও নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। একই সঙ্গে শিক্ষাসংক্রান্ত সেবা, ইলেকট্রিক, হালকা প্রকৌশলশিল্প, ধাতব ও চামড়াজাত পণ্য ব্যবসায়ও এগিয়ে আসছে আজকের নারী। এক সময় আইটি সেক্টরটি শুধু পুরুষের জন্য মনে করা হলেও এখন এ সেক্টরে নারী উদ্যোক্তারা অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করছে।

দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে মোট নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ছিল ৪১ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে শুধু ২০১৩ সালে নারী উদ্যোক্তা বেড়েছে ৩ হাজার ৩১৭ জন। ২০১২ সালে এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ২৭৩ জন। অর্থাৎ এক বছরে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬০ শতাংশের বেশি। ২০১০ সালের ডিসেম্বর শেষে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ হাজার ২৪০ জনে। ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৪ বছরে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে ২১৫ দশমিক ১০ শতাংশ। ২০১৩ সালে শুধু এসএমই খাতে নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে তিন হাজার ৩১৭ জন। এ হার ২০১২ সালের তুলনায় ১৬০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) এসএমই খাতে এক হাজার ৭৮২ জন নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। ২০১৪ সালের প্রথম তিন মাসে এর পরিমাণ ছিল ৬৭৭ জন। ফলে ২০১৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ২০১৪ সালে এক হাজার ১০৫ জন বেশি নারী উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ শতকরা হিসেবে এর বৃদ্ধির হার ১৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ। ২০১৫ সালের ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে মোট এক লাখ ২৬ হাজার ৫১৪ জন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে। এসব নতুন উদ্যোক্তা ২০ হাজার ৬০৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা নিয়েছে। বর্তমানে দেশে ৪২ হাজারের বেশি কল-কারখানার মধ্যে ২ হাজার ১৭৭টি ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ কারখানার মালিক নারী।

দৃঢ়প্রত্যয়ী, আত্মবিশ্বাসী ও সফল ৬০ জনেরও বেশি নারী সংগঠন বাংলাদেশে উইমেন ইন টেকনোলজির (বিডব্লিউআইটি) প্রেসিডেন্ট ও সফটঅয়্যার ফার্ম দোহাটেক নিউ মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা লুনা সামসুদ্দোহা মনে করেন, নারীরা এখন উদ্যোক্তা হিসেবে অনেক অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সংখ্যার চেয়েও ক্ষেত্রটা অনেক বেশি অগ্রসর হয়েছে। আগে যেসব ব্যবসা নারীদের জন্য ভাবাই যেত না, নারীরা এখন তা করে দেখাচ্ছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সফলও হচ্ছে। তবে আমার মনে হয়, পারিবারিক বাধা, সীমাবদ্ধতা এখনো নারীরা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এটা কাটিয়ে উঠতে পারলে নারীরা আরও ভালো করবে। আমি আজকের নারীদের উদ্দেশে বলতে চাই ‘সময়টাও আমাদের, সুযোগটাও আমাদের।’ পিছিয়ে তবে কেন থাকব আমরা। এগিয়ে চলো আজকের নারী।’favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment