কৃষিতে সাফল্য নিয়ে আসছেন শিক্ষিত উদ্যোক্তারা

কৃষিতে সাফল্য নিয়ে আসছেন শিক্ষিত উদ্যোক্তারা

  • এস.এম.হামীম

শিক্ষিত যুব সমাজের কৃষিতে আত্মনিয়োগের মধ্য দিয়ে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মেচন হয়েছে বাংলাদেশে। বর্তমানে অনেকেই নিজের মেধা ও শ্রমকে বিলিয়ে দিয়ে হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। তারা একেকজন ব্যক্তি জীবনে ভাগ্য উন্নয়নের কারিগর। তাদেরই একজন ময়মনসিংহের দেওয়ানীয়াবাড়ী গ্রামের মো. বাদল মিয়া। শখের বসে দুইটি পুকুরে মাছ চাষের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন। বর্তমানে প্রায় ৫০টি পুকুরে চাষ করছেন তেলাপিয়া, পাংগাস,শিং, পাপদাসহ দেশীয় জাতের মাছ।

ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশুনা শেষ করে বাবার ব্যবসা-বানিজ্য দেখার পাশাপশি বাদল মিয়া মাছ চাষের মাধ্যমে কৃষিতে আত্মনিয়োগ শুরু করেন। কেন এ পথে আসা? ছোট বেলা থেকেই মাছ চাষের প্রতি আগ্রহ ছিল। ময়মনসিংহ শহরে প্রথম যখন পাংগাস চাষ শুরু হয় ছয়হাজার মাছ দিয়ে তার বাবা শুরু করেছিলেন।পরবর্তিতে একটা দুইটা করে পুকুর বাড়াতে বাড়াতে বিষদ পরিষরে মাছ চাষ শুরু করেন বাদল মিয়া।

মাছ চাষের পাশাপাশি নিজস্ব পদ্ধতীতে তৈরী করছেন মাছের খাবার। নিজেদের মাছের খাবারের ঘাটতি পূরন করেও বর্তমানে তা বাজারজাত করা হচ্ছে।

বাদল মিয়া বলেন,সময়ের সাথে সাথে যখন মাছের খাবারের চাহিদা বেশি হলো, তখন চিন্তা করলাম, অনান্য ফিটমিল আমাদের থেকে একটা প্রফিট নিচ্ছে।আমাদের যেহেতু ৪/৫টন খাবার লাগে প্রতিদিন।তাই আমরা নিজেরাই কাচাঁমাল কিনে খাবার তৈরী শুরু করলাম।

এছাড়াও তিনি শুরু করেছেন বিভিন্ন জাতের গরু পালন। শখের বসে বছর খানেক আগে দুইটা গরু দিয়ে শুরু করেছিলেন খামারটি।বর্তমানে খামারে রয়েছে ৪০-৫০ ছোট-বড় গরু।

এসব উদ্যোগের ফলে সৃষ্টি হয়েছে বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান। এখানে প্রতিদিন ১৫-২০জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাদেরই একজন মজিদ, আট বছরজাবত এইখানে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। কাজ করে যা পায় তা দিয়ে ভালোই চলে যাচ্ছে তার।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক দেবাশীষ রায় বলেন, আজ থেকে ১০-২০ বছর আগের কৃষিটা ছিল গ্রামকেন্দ্রিক। এখন তা পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন উন্নত কৃষির দিকে ঝুঁকছে। বর্তমানে ঘরে ঘরে অনেক শিক্ষিত যুবক রয়েছে। সেই তুলনায় চাকরি নেই। কৃষিতে শিক্ষিত যুবকদের আসার কারণ হচ্ছে, তারা জেনে বুঝে আসছে যার ফলে তারা এখান থেকে একটা মুনাফা নিয়ে যেতে পারে। এইভাবে যদি শিক্ষিত যুবকরা কৃষিতে আত্মনিয়োগ করে তবে দেশ আরো দ্রুত এগিয়ে যাবে।

এই সেক্টর থেকে বছরে প্রায় ৫০-৬০ লক্ষ টাকা আয় করছে বাদল মিয়া। এতে করে কৃষির প্রতি যুবকদের আগ্রহ দিনদিন বাড়বে। ফলে প্রতিটি যুবক হবে একজন সফল উদ্যোক্তা। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সফল উদ্যোক্তা এক বিপ্লবের নাম। এটি বদলে দিয়েছে এ দেশের কৃষি অর্থনীতির চিত্রপট। সেই সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতির চাকা।

এস.এম.হামীম : শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

Sharing is caring!

1 Comment on this Post

  1. টেক নির্ভর কৃষি নিয়ে কাজ করা উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন এখন। এছাড়া যারা উদ্যোগ গ্রহণ করে ট্রেডিশনাল ফার্মিং এ সফলতা লাভ করতেছে, তাদের সরকারি সুদৃষ্টির বিশেষ প্রয়োজন। ভাল একটা লেখা।

    Reply

Leave a Comment