তরুণ উদ্ভাবকদের একদিন
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
স্বপ্নবাজ তরুণের প্রচেষ্টায় দেশের অর্থনীতির চাকাকে আরও গতিশীল করা যায়। দারিদ্র্যসীমা জয় করে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি করা যায়। তারুণ্যের হাতেই হোক দেশ জাতির পরিবর্তন। আর এই তরুণ সমাজকে এগিয়ে নিতে এবং তরুণ সমাজের চিন্তা, চেতনা, মননশীল বুদ্ধিভিত্তিক উন্নয়নে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম।
জিপিহাউসে আয়োজিত টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের বাংলাদেশ রাউন্ড থেকে আইবিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিয়া মো খেইং ও রাকিব রহমান শাওন ডিসেম্বর মাসে নরওয়ের অসলোতে বৈশ্বিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচিত হন।
নোবেল পিস সেন্টার (এনপিসি) ও টেলিনর গ্রুপ আয়োজিত ইয়ুথ ফোরাম ১৩টি দেশের ১৮ থেকে ২৮ বছরের তরুণ-তরুণীদের জীবন বদলানোর ধারণা উপস্থাপনের সুযোগ দেয়। ফোরামের মূলভাব ‘শান্তির জন্য ডিজিটালকরণ’ বাংলাদেশে এর চূড়ান্ত নির্বাচনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এবং এর আয়োজক ছিল গ্রামীণফোন। ১৪০০-এর বেশি শিক্ষার্থী এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আবেদন করেন। বিজয়ী ধারণাগুলো হচ্ছে মুক্তি এবং মেক দেম স্ট্রং।
কঠোর বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত ৭ প্রতিযোগী গ্রামীণফোন কর্মকর্তা ও বাইরের অতিথিদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারক প্যানেলের সামনে তাদের ধারণা উপস্থাপন করেন। এই ৭ জনের মধ্যে থেকে দু’জনকে ৮ থেকে ১১ ডিসেম্বর অসলোতে অনুষ্ঠিতব্য চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচন করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্থানীয় উদ্যোক্তা, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিসেল ব্লেকেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের সিইও এবং অন্যান্য কর্মকর্তা।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের পল্গ্যাটফর্ম থেকে শেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আয়োজন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সিসেল ব্লেকেন বলেন, তোমাদের ধারণা এবং উদ্ভাবনগুলো বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম এবং ডিজিটালাইজেশন ফর পিস পল্গ্যাটফর্ম ব্যবহার করে এদের বাস্তবায়ন করতে আমি তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি বলেন, ‘আজকে যেসব অসাধারণ ধারণা উপস্থাপিত হয়েছে, তা আমাকে উজ্জীবিত করেছে। কারণ এর সবগুলোই বাংলাদেশকে আরও ভালো একটি দেশে পরিণত করার ইচ্ছা প্রকাশ করছে।’
বিজয়ীরা বিশ্বের অন্যান্য স্থানের বিজয়ীদের সঙ্গে অসলোতে তিন দিনের সম্মেলনে মিলিত হন। যেখানে তারা মোবাইল ও ডিজিটাল প্রযুক্তির রূপান্তরের ক্ষমতাকে বোঝার এবং একে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি তারা নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ারও সুযোগ পান। বিজয়ী দু’জন অসলোতে মহাআসরে যোগ দেওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, এটা সত্যিই অসাধারণ মুহূর্ত ছিল আমাদের জন্য। নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে নিজেদের বেশ গর্বিত লাগছে। অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিকে কাছ থেকে দেখেছি ও তাদের অনুভূতি জানার সুযোগ হয়েছে।
এ ছাড়া ফোরামে বিভিন্ন দেশের তরুণদের সঙ্গে কাজ করতে হয়েছে, যা ভিন্ন সংস্কৃতি, শিক্ষা, আইডিয়ার আদান-প্রদানের সুযোগ করে দেয়। বিজয়ীরা আরও বলেন, প্রত্যেকেই প্রত্যেক দলের সঙ্গে তাদের আইডিয়াতে ইনপুট দিয়েছিলেন, সে সুযোগ ছিল। আমরা অসলো শহর ঘুরে বেড়িয়েছি, অনেক মজা করেছি। বিজয়ী ২ শিক্ষার্থী মিয়া মো খেইং ও রাকিব রহমান শাওন বর্তমানে টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের দুটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছেন। বিগ ডাটা ফর সোশ্যাল গুড নিয়ে কাজ করছেন রাকিব এবং মিয়া মো খেইং ডিসেন্ট ওয়ার্কিং কন্ডিশন নিয়ে কাজ করছেন।