মনের আলোয় কেমব্রিজের প্রথম শ্রেণি
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
সনদ হাতে অ্যালান হেনেসিঅ্যালান হেনেসির গল্পটা বাধা পেরোনোর, সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে সফলতার। জন্মগতভাবেই তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। চোখের আলো না থাকলেও হার মানেননি তিনি। লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি আইন বিভাগে প্রথম শ্রেণি পেয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
১৯৯৫ সাল। উপসাগরীয় যুদ্ধ শেষ হয়েছে বছর তিনেক আগে। তখনো ইরাকজুড়ে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা। সে বছরই জন্ম অ্যালেনের। দিন গড়াতেই মা-বাবা বুঝলেন তাঁদের ছেলের চোখে সমস্যা রয়েছে। চক্ষু ডাক্তার দেখানো হলো। খুব একটা কাজে এল না। যুদ্ধের দামামার পর বাগদাদে তেমন ভালো চক্ষুবিশেষজ্ঞ ছিলেন না। পেরিয়ে গেল ছয় মাস। অ্যালানের বাবা একটা সুযোগ পেলেন। তাঁদের আসবাব, গাড়ি ও সম্পত্তির কিছু অংশ বেচে লন্ডনে পাড়ি জমালেন। রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে লন্ডনের কাউন্সিল এস্টেটে ঠাঁই হলো তাঁদের। সেখানেই অ্যালেনের বেড়ে ওঠা। লন্ডনে চিকিৎসার পর অ্যালেন বাঁ চোখে সামান্য দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলেন। কোনো জিনিস চোখের খুব কাছে ধরে এখন দেখতে পারেন তিনি।
কাউন্সিল এস্টেটের একটি স্কুলে পড়াশোনার হাতেখড়ি অ্যালেনের। অ্যালেন প্রথম যেদিন লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ার চেষ্টা করছিলেন, তখন কেউ একজন বলেছিলেন, ‘তুমি কি বইয়ের গন্ধ নিচ্ছ?’ তিনিও মজা করে জবাব দিয়েছিলেন, ‘না, নাক দিয়ে বই পড়ার চেষ্টা করছি!’
সবাইকে তাক লাগিয়ে অ্যালেন জিসিএসই (জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন) পরীক্ষায় সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। ২০১২ সালে স্নাতকে ভর্তির আবেদন করেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবাইকে অবাক করে আইন বিভাগে ভর্তির জন্য মনোনীত হন অ্যালেন। ২২ বছরের টগবগে সেই তরুণ মনোনয়নের মান রেখেছেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এবার তাঁর স্বপ্ন আকাশছোঁয়া।