‘চাকরিই সফলতার একমাত্র মাপকাঠি নয়’

‘চাকরিই সফলতার একমাত্র মাপকাঠি নয়’

  • লিডারশিপ ডেস্ক

শুধু চাকরি বা অর্থ উপার্জনই সফলতার একমাত্র মাপকাঠি হতে পারে না। নিজের ব্যক্তিত্বের উন্নয়নই আসল উন্নয়ন।

কথাগুলো বলেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ও সমাজকর্মী শাবানা আজমি। গতকাল সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সমাবর্তনে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্র নুরুল ইসলাম নাহিদ। আর সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শাবানা আজমি।

শাবানা আজমি বক্তব্য দেওয়ার সময় মাঝে মাঝেই তুমুল হাততালি দিচ্ছিলেন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। বক্তব্য শুরু করার পরপরই তিনি শিক্ষার্থীসহ উপস্থিত দর্শকদের কাছে জানতে চান, তাঁর কথা শোনা যাচ্ছে কি না? জবাবে সবাই চিৎকার করে জানান, তাঁরা শুনতে পাচ্ছেন।

ভারতের এই বিখ্যাত অভিনেত্রী একাধারে কাজ করেছেন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চনাটকে। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পাঁচবার ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া তিনি ২০১২ সালে ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ভারতের রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন।

ভারতের বিশিষ্ট এই সমাজকর্মীর বক্তব্যের বড় অংশজুড়েই ছিল নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি। তিনি বলেন, উপমহাদেশের সমাজ অতিমাত্রায় পিতৃতান্ত্রিক। এখানে মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা বেশি গুরুত্ব পায়। কারণ, তারা ছেলে। মেয়েদের শিক্ষার সমান অধিকার, নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার সুযোগ খুবই সীমিত। এ বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। বাবা-মাকেও ছেলে ও মেয়েকে সমানভাবে দেখতে হবে। ছেলে ও মেয়ের সমানাধিকারই একটি সভ্য সমাজ হতে পারে।

নারীর প্রতি সহিংসতার কড়া সমালোচনা করে শাবানা আজমি বলেন, যেকোনো কারণেই হোক নারীর প্রতি সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাঁর বক্তব্যে অভিনেত্রী হওয়ার পেছনে বাবা প্রখ্যাত কবি কাইফি আজমির সহযোগিতা এবং অভিনেতা ফারহান আখতারের এক বছর পড়াশোনা থেকে সরে থাকার কথাও উঠে আসে। বক্তব্য দেওয়ার সময় ফারহান আখতারকে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা চেনেন কি না, জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা উচ্চ স্বরে চেনার কথা জানান।

প্রখ্যাত এই অভিনেত্রী ডিগ্রিপ্রাপ্ত সব শিক্ষার্থীর সাফল্য কামনা করে দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে প্রধান অতিথি ও সমাবর্তনের সভাপতি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সমাবর্তনের উদ্বোধন করেন এবং ডিগ্রিপ্রাপ্ত সনদ নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দেশ যখন উন্নয়নের ধারায় অব্যাহত, তখন স্বাধীনতাবিরোধী একটি গোষ্ঠী ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু মেধাবী শিক্ষার্থীকে জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে। এদের কেউ কেউ জঙ্গি কার্যক্রমে অংশ নিয়ে নিজেদের ধ্বংস করে ফেলেছে। তারা সমাজে নিন্দিত হয়েছে। তরুণেরা যাতে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে জীবন শেষ না করেন, সে জন্য সজাগ থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব প্রমুখ।

এবারের সমাবর্তনে মোট ১ হাজার ২৮৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ভালো ফলের জন্য স্নাতকে জয়নব সায়ীদ আহমেদ ও স্নাতকোত্তরে রাফিয়াত রশীদ নামে দুই ছাত্রী আচার্যের স্বর্ণপদক পান। এ ছাড়া ২৯ জনকে উপাচার্যের স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

সূত্র: প্রথম আলো।favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment