রকস্টার সাদমান
সজীব হোসাইন, রংপুর : চিকিৎসাবিদ্যার রসহীন জীবনে গানই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। বিতর্কচর্চার বয়সও নেহাত কম নয়। ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাঁর সরব উপস্থিতি। চিকিৎসা-বিদ্যায় ভর্তির পরে বন্ধুদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করছেন ব্যান্ড দল ‘ক্যাফেইন’। গানের আসরে নিয়মিত দেখা মেলে তাঁর। বলছিলাম রংপুর মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিবের কথা। গান পাগল সাদমান ক্যাম্পাসে পরিচিত রকস্টার নামেও।
স্কুলজীবন থেকে সংগীতের সাথে তাঁর বসবাস শুরু। স্কুল পর্যায়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘নতুন কুঁড়ি-২০০৫’ প্রতিযোগিতায় বাদ্যযন্ত্র বিভাগে(তবলায়) হয়েছেন প্রথম আর ২০০৭ সালে জাতীয় শিশু শিল্পী পুরস্কার প্রতিযোগিতায় হয়েছেন দ্বিতীয়। এখানেই শেষ নয়, সাদমান জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জয় পেয়েছেন একাধিকবার দশম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ২০০৮ সালে। শুধু মেডিকেল ক্যাম্পাস নয়, রংপুরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর ব্যান্ডদলের নিয়মিত পরিবেশনা তো থাকছেই।
বাবা-মায়ের চাকরির সুবাদে সাদমান জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঠাকুরগাঁও শহরে। বাবা মকসেদুল আলম, ও মা শাহনাজ বেগমের উৎসাহেই তাঁর গানে হাতে খড়ি। তাঁর একমাত্র ছোট ভাই তৌসিফ আহমেদ।
গান ও তবলা শেখা নিয়ে সাদমান শোনালেন মজার এক গল্প। ছয় বছর বয়সে মায়ের হাত ধরে ছুটতে হতো গানের ক্লাসে। তারপাশেই হতো তবলার ক্লাস। ‘প্রায়ই গানের ক্লাস ফেলে তবলার ক্লাসে যেতাম। তবলায় আমার বিশেষ আগ্রহ দেখে তবলার উস্তাদ আমাকে তাঁর ক্লাস ফ্রি করে দেন।’ বলছিলেন সাদমান। সেই থেকেই গান আর তবলাই তাঁর প্রাণ।
পড়াশোনাতেও ঈর্ষণীয় সাফল্য তাঁর। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুটোতেই অর্জন করেছেন জিপিএ-৫। তিনি ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে মাধ্যমিক ও ঢাকার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে ২০১১ সালে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন।
সাদমান জানান, যাঁরা চিকিৎসাবিদ্যায় পড়েন, তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই নিয়মিত পড়ার চাপে রসকষহীন হয়ে পড়েন। তাঁদের বিনোদন দেওয়ার জন্যই নিজে উদ্যোগী হয়ে গড়ে তুলেছি ব্যান্ড দল ‘ক্যাফেইন’।
পড়াশোনার পাশাপাশি সংগীতের চর্চা অব্যাহত রাখতে চান সাদমান। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাদমান বলেন, ‘চিকিৎসা পেশায় উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে চাই। আর গান তো থাকবেই।’