পৃথিবী ধ্বংসের ইঙ্গিত দিচ্ছে ‘কেয়ামতের ঘড়ি’

পৃথিবী ধ্বংসের ইঙ্গিত দিচ্ছে ‘কেয়ামতের ঘড়ি’

পৃথিবী ধ্বংস হতে আর মাত্র তিন মিনিট বাকি রয়েছে’ এমনটিই বলছে ‘কেয়ামতের ঘড়ি (ডুমসডে ক্লক)’ । ওই ঘড়ির কাঁটা তিন মিনিট পার হয়ে মধ্যরাতে, অর্থাৎ ১২টায় পৌঁছালে মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন হবে এ পৃথিবী!

গত বছর থেকে একই অবস্থানে রয়েছে কেয়ামতের ঘড়ির কাঁটাটি। সময়টা খুব কম, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। এ সময়ের মধ্যে পৃথিবীকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে, ঘড়ির কাঁটা পেছনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানে দুটি পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের দুই বছর পর ১৯৪৭ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সাইন্টিস্ট ‘কেয়ামতের ঘড়িটি’ তৈরি করে। বুলেটিনের পরিচালক পর্ষদ এর দেখভাল করে। এ ঘড়িতে মধ্যরাত হতে যত সময় বাকি, সেটা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র, পরিবেশ ও প্রযুক্তিগত হুমকির তীব্রতা বিবেচনা করা হয়। মধ্যরাত হওয়ার অর্থ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়া। পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার ব্যাপারে ঐশ্বরিক কোনো প্রভাব এখানে বিবেচনা করা হয় না। ঘড়িটির নিয়ন্ত্রণকারীরা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাতের দিকে এগিয়ে আসছে, যা মানবজাতির ধ্বংসকে নির্দেশ করে। এটা সত্যিই মানুষের কবর রচনার মতো সংবাদ।

বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সাইন্টিস্ট-এর গবেষক লরন্সে ক্রায়াস বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের পন্থা পরিবর্তন না করি, তাহলে আমরা মনে করি, মানবজাতি মারাত্মক বিপদের মধ্যে রয়েছে।’ ওয়াশিংটন থেকে তিনি ঘোষণা দেন, ‘কার্যকরী পদক্ষেপ এসব হুমকি কমাতে পারে। কিন্তু আমরা যদি সেগুলোকে (হুমকিগুলোকে) স্বীকৃতি দিই, তাহলে সত্যিই আমাদের সেগুলোর মুখোমুখি হতে হবে অচিরেই।’ বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সাইন্টিস্ট-এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ঘড়িটি স্থাপনের সময় মহাপ্রলয়ের সাত মিনিট বাকি ছিল। কিন্তু পরে পরমাণু ও মানুষের তৈরি হুমকি মোকাবিলায় বিশ্ব জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ায় এর অবস্থান পেছনে চলে আসে বেশ কয়েকবার। কিন্তু বিশ্বে পরমাণুশক্তির ব্যবহার ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় ‘কেয়ামতের ঘড়ি’র কাঁটা ফের সামনের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করে।

ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ২০১০ সাল পর্যন্ত ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাতে পৌঁছাতে বাকি ছিল মাত্র পাঁচ মিনিট। কিন্তু ওই বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ পরমাণু অস্ত্র ধ্বংসের ব্যাপারে অঙ্গীকার ব্যক্ত করায় ঘড়ির কাঁটা এক মিনিট পিছিয়ে ছয়ে চলে আসে।
তবে পারমাণবিক অস্ত্রাগার ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে না পারায় ২০১২ সালে ফের আগের অবস্থায় ফিরে আসে এটি। ২০১৫ সালে জলবায়ু পরিবর্তন ও যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকীকরণের ফলে ঘড়ির কাঁটা চলে আসে ১১টা ৫৭ মিনিটে। খবর ইউএসএটুডে, দি ইন্ডিপেনডেন্টের। favicon594

Sharing is caring!

Leave a Comment